করোনার টিকার জন্য নিবন্ধন করার দেড় মাস পরও টিকা পাননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, গত ২৪ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত নির্ধারিত ওয়েব লিংকে টিকার জন্য নিবন্ধন করেন তারা। এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা নিশ্চিত করা হয়নি। এ ব্যাপারে কোনো হালনাগাদ তথ্যও জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খোলার কথা থাকলেও গত ২৯ এপ্রিল করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করে তবেই খুলবে হল। এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা নিশ্চিত না করায় হল খোলার বিষয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন : ভ্যাকসিন অনিশ্চিত, ১৭ মে খুলছে না ঢাবির হল

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা অতিমারিতে বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনলাইন পাঠদান বা অন্যান্যভাবে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিলেও বাংলাদেশের চিত্র একদম ভিন্ন। এখানে নানাবিধ সমস্যার একটি হলো নেটওয়ার্কের। তাই চাইলেও সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্নাতক-স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গত ৩১ মার্চ ভ্যাকসিনের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি প্রশাসন। ভ্যাকসিন প্রদানের অনন্ত ১ মাস পর হল খুলবে। এখন পর্যন্ত এনিয়ে কোনোরকম আপডেট আসেনি বলে আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কি না এ নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। 

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলার ঘোষণা দেন। তবে এর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহ পর কার্যকারিতা শুরু হয়, সেই কারণে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার এক মাস আগেই অর্থাৎ ১৭ এপ্রিলের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ বলেন, নির্ধারিত সময়ে ভ্যাকসিন পায়নি কোনো শিক্ষার্থী। ২০ মের মধ্যে আমাদের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দিয়ে জুন মাসের ২য় সপ্তাহে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবি জানাচ্ছি।

তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, রেজিস্ট্রেশন করিয়ে টিকা না দেওয়া এক ধরনের প্রতারণা। যেটা ঢাবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করেছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত শিক্ষার্থীদের টিকাদানের ব্যবস্থা করা। কারণ করোনা টিকা একটা দীর্ঘ মেয়াদি প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া ঠিক হবে না প্রশাসনের।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, টিকা নিয়ে এ মুহূর্তে এ কিছু বলা কঠিন। এটা তো জাতীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে তারপর বলা যাবে। আগাম বলার কোনো সুযোগ নেই।

এইচআর/এসকেডি