শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।

শনিবার (২৯ মে) বিকেলে ‘অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত টিকা প্রদান ও স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিতসহ তিন দফা দাবি’তে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। সমাবেশের পর রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দিক প্রদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন প্রমুখ।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই। আন্দোলন হচ্ছে কিন্তু যারা আন্দোলন করছে সেখানে শিক্ষার্থীদের যে দাবি সেটাকে প্রতিফলন করছে না’ শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।

তিনি বলেন, অনলাইন ক্লাসে ৩০-৩৫ % শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। দেশের বিরাট একটি অংশ যেখানে অবহেলিত সেখানে কীভাবে শিক্ষামন্ত্রী অনলাইন ক্লাসকে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাস্তবায়ন করতে চান?

তিনি আরও বলেন, অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার যে ঘোষণা তিনি (শিক্ষামন্ত্রী) দিয়েছেন। তা থেকে প্রমাণিত হয় তিনি কতটুকু শিক্ষার্থীদের জন্য চিন্তা করেন। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণাও শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দ্রুত টিকা প্রদান করে স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বারবার তার বক্তব্যের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়েছেন, কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীরা কী ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন হবে তার কোনো ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে পারেননি।

শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে ধিক্কার জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন (একাংশ) সভাপতি মিতু সরকার বলেন, করোনায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের জীবন এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ধ্বংসের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে না পারলে অতল গহ্বরে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর যে সমস্যা সৃষ্টি হবে তা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারগুলোর যে অবস্থা সেখানে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাকে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সম্ভব্য সমস্যার সমাধান নিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবির বলেন, আমরা এক মজার দেশে বসবাস করছি! যেখানে সব কিছুর জন্য আন্দোলন করতে হয়। পরীক্ষার জন্য, পরীক্ষা পেছানোর জন্য, পরীক্ষা বন্ধ করার জন্য, ক্লাস চালু করা, বন্ধ করা, চিকিৎসার জন্য এমনকি রিকশা চালানোর জন্য আন্দোলন করতে হয়।

করোনার সময় সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে ইকবাল কবির বলেন, করোনার এ সময়ে গরিব, অসহায় ও দুর্দশাগ্রস্ত সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ‘নৌকার কোনো ক্ষতি হয়নি’।

সমাবেশে ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও বিপ্লবী যুব আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এইচআর/এসকেডি