তিন স্কুলছাত্রের সহায়তায় প্রকৃতিতে ফিরে গেল ১৩টি কচ্ছপ। মিরপুরের ভাষানটেক থেকে উদ্ধার করে কচ্ছপগুলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে অবমুক্ত করা হয়েছে।

বুধবার (২ জুন) দুপুর তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন লেকে ছেড়ে দেওয়া হয় কচ্ছপগুলো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা সংগঠন ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ অর্গানাইজেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা।

কচ্ছপ উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া তিন স্কুলছাত্র হলো, আসাদুজ্জামান সীমান্ত, আল নাহিয়ান আবির ও অঞ্জন কুমার তালুকদার।

আসাদুজ্জামান সীমান্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা মিরপুরের বিভিন্ন দোকান থেকে, এছাড়া বিভিন্নজনের কাছ থেকে কচ্ছপগুলো সংগ্রহ করেছি। কচ্ছপগুলো তাদের থেকে কিনে নিতে হয়েছে। আমরা চাই প্রকৃতির এ সুন্দর প্রাণিটা প্রকৃতিতেই বিচরণ করুক। আবদ্ধ পরিবেশে আটকে না থাকুক। সেই লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবাই সবার জায়গা থেকে এগিয়ে এলে কাজটা আরও সহজ হবে এবং প্রকৃতি থাকবে সুন্দর।

অধ্যাপক কামরুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এগুলো ইন্ডিয়ান রুফড টারটেল যার বৈজ্ঞানিক নাম পাংশুরা টেকটা। বাংলাদেশে এটা পরিচিত কড়ি কাইট্টা কচ্ছপ নামে। কচ্ছপগুলো বাংলাদেশের হাওড় অঞ্চলে পাওয়া যায়। তবে কচ্ছপগুলো ছোট আর দেখতে সুন্দর হওয়ায় এদের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষ ঘরে একুরিয়ামে সাজিয়ে রাখেন। কিন্তু তা সম্পূর্ণ বেআইনি।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ঢাকার পরিচালক এ এস এম জহির উদ্দিন আকন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিলুপ্ত প্রায় উপজাতির যেকোনো কচ্ছপ লালন পালন কিংবা বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয়। আইনের পাশাপাশি এ ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করা জরুরি।

প্রসঙ্গত, এ প্রজাতির কচ্ছপ ভারত, নেপাল, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। এছাড়া দ্যা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কংজার্ভেশন অফ নেচার এর বিপদসীমায় আগত প্রজাতীর লাল তালিকাভুক্ত ইন্ডিয়ান রুফড টারটেল বা কড়ি কাইট্টা কচ্ছপ। যা কোনো ভাবেই পোষা যায় না।

আলকামা/এমএএস