শিক্ষা উপদেষ্টা
নিজেরা দলাদলি করলে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় চরমভাবে ব্যর্থ হবে
শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিগত বছরগুলোতে কী হয়েছে আমরা জানি। শিক্ষক নিয়োগের বদলে ভোটার নিয়োগ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মেধার বিকাশ ও শিক্ষা অর্জনের জন্য এসেছি। সেখানে নিজেরা দলাদলি করলে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় চরমভাবে ব্যর্থ হবে। শিক্ষকদের কার্যক্রম যেন পরিবেশকে নষ্ট না করে সে দায়িত্ব শিক্ষকদের নিতে হবে।
রোববার (৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে সিনেট ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বদলে পুলিশের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কে কী লিখছে তা নজরদারি করতেন। শিক্ষক হিসেবে কত নীচে আমরা নেমেছি। এটা তার বাস্তব উদাহরণ। ড. জোহা (সাবেক প্রক্টর, রাবি) পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন। আর ঢাবি উপাচার্যের ভবনে একটি ঘটনা ঘটে। তখন উপাচার্য পুলিশকে নির্দেশ দেন ছাত্রদের গুলি করার জন্য।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শিক্ষকদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন বা মর্যাদাহানি হয় এমন কাজ তোমরা করো না। নিজেদের দাবি আদায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করো। এই সময়ে যারা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারা দায়িত্ব চেয়ে নেননি। আমরা হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ধৈর্যশীল ও সহনশীল হতে হবে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিচার করি। অপরাজনীতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে আছে। শিক্ষক নিয়োগেও পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। সামনে আবারও শিক্ষক নিয়োগ না হয়ে ভোটার নিয়োগ হতে পারে। তাই আপনাদের পরিষ্কার করতে হবে যে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ দেখবেন নাকি ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ দেখবেন। দলীয় স্বার্থ দেখলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী আছে। এই সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। আমাদের ছেলেরা যে রক্ত দিয়েছে তার দায় আমাদের শোধ করতে হবে। এই জায়গায় আমরা বেইমানি করলে, আমরাই সবচেয়ে বড় বেইমান।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ইমেরিটাস এ কে এম আজহারুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান এবং কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মতিয়ার রহমান।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা অবমুক্ত করে দিবসটির উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা। এরপর শোভাযাত্রা ও প্রধান অতিথি কর্তৃক বৃক্ষরোপণ করা হয়।
জুবায়ের জিসান/আরএআর