জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক বছরের মাথায় মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক বিভ্রান্তির কারণে এই হতাশা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই গণআন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী কেউ কেউ।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দেশে-বিদেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ এবং শামসুল আলম লিটন।

মঙ্গলবার বেলা ১২টায় ইউনিভার্সিটির হলরুমে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ ক্যাম্পাসের ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ডিন অধ্যাপক ড. গোলাম আহমেদ ফারুকী, ফ্যাকাল্টি অব সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড লিবারেল আটর্সের ডিন অধ্যাপক ড. বিজয় প্রসাদ বড়ুয়া, শিক্ষার্থী আহনাফ ফাতেহ হোসেন ও মাসফিয়া রহমান রুহি। আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির প্রোভোস্ট চ্যান জো জিম।

আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও সম্প্রতি ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভায় সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, তরুণরা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করে ঘরে ফিরে গেলেও যারা তাদের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছে তারা সেই দায়িত্ব কতটা পালন করতে পেরেছে সেটা আজ বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়নি, দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট, সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি। এই লক্ষ্যপূরণ না হলে ছাত্ররা আবার মাঠে নামবে বলে মনে করেন তিনি।

শামসুল আলম লিটন বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে শিখেছে। গণতন্ত্র, সমতা, ন্যায্যতা, সম্মান ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে তারা আবার প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

অধ্যাপক ড. গোলাম আহমেদ ফারুকী বলেন, বাংলাদেশ এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেটা পরিবর্তনের পথে শুরু মাত্র। আরও অনেক পথ যেতে হবে। কবে, কত দিনে এবং কীভাবে সেই পথ পাড়ি দেবে সেটাই দেখার অপেক্ষা।

অধ্যাপক বিজয় প্রসাদ বড়ুয়া বলেন, নৈতিকতা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা ছাড়া বড় লক্ষ্য অর্জন করা যায় না। ছাত্র সমাজের লক্ষ্য অর্জনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

ইউনিভার্সিটির প্রভোস্ট চ্যান জো জিম বলেন, জুলাই আন্দোলনের স্বপ্ন ও এই দেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে বিশ্বাস হারালে চলবে না। আন্দোলনের ত্যাগ ভুলে না গিয়ে সবাইকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে জাতি গঠনে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনা সভা শেষে ২০২৪ সালের জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের ওপর চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

এমজে