শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসনে লকডাউনের মধ্যেই প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়া শুরু করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রশাসন।

সোমবার (১২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল ব্যবহার করে গুগল ক্লাসরুমে শুরু হয়েছে এ পরীক্ষা।

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, জুলাই মাসে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল, তাই ঈদের আগেই অনলাইন পরীক্ষা শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, কীভাবে অনলাইন পরীক্ষা দিতে হয় সেজন্য  শিক্ষার্থীদের ডেমো পরীক্ষা নিয়েছিলাম। সেখানে সব কিছু বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের। অনলাইনে দ্রুত পরীক্ষা নিয়ে সেশনজটের কবল থেকে তাদের মুক্তি দিতে চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল-আলম বলেন, দীর্ঘ ১৫-১৬ মাসের করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। বারবার চেষ্টা করেও পরীক্ষা নিতে পারিনি। শিক্ষার্থীরা মার্চ মাসে পরীক্ষা দিতে নোয়াখালী এসেও ফিরে গিয়েছিল। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন পরীক্ষার বিকল্প নেই। সোমবার (১২ জুলাই) দুই বিভাগের পরীক্ষা হয়েছে। আমরা আশাবাদী যে খুব তাড়াতাড়ি সব বিভাগের পরীক্ষা শুরু করতে পারব।

জানা যায়, গত ২৮ থেকে ৩০ জুন টানা তিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেলের (আইকিউএসি) তত্ত্বাবধানে অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপে দুই সেশনে তিন ঘণ্টা করে অনুষ্ঠিত হয় অনলাইন পরীক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।

এতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ পান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, প্রত্যেক বিভাগের প্রত্যেক ব্যাচের শ্রেণি প্রতিনিধিসহ ৪-৫ জন করে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করা কর্মকর্তারা।

প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রশ্ন প্যাটার্ন, পরীক্ষার রুলস রেগুলেশন এবং কীভাবে পরীক্ষা হবে সেই বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ পাওয়া শিক্ষার্থীরা আবার বিষয়গুলো বিভাগের অন্য সহপাঠীদের বুঝিয়ে দেন।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনা মহামারির কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। পরে এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া শুরু হলেও ২৩ ফেব্রুয়ারি সব পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

১ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাডেমিক কাউন্সিলের সঙ্গে পরামর্শ করে সশরীরে এবং অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে পারবে। সর্বশেষ মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে।

এরপর গত ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় জুলাই থেকে স্নাতক প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

হাসিব আল আমিন/এমএসআর