ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন-স্পট নিবন্ধন করেই সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সিনোফার্মের করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। তিনটি বুথে দিনে সর্বোচ্চ ৫০০ শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।

সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় এই টিকা কার্যক্রমের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পটি উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। 

উদ্বোধন শেষে উপাচার্য বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কথা বিবেচনা করে আমরা সরকারের কাছে মেডিকেল সেন্টারে ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম চালুর অনুরোধ করেছিলাম। এতে সকলেই টিকার আওতায় আসতে পারবে। শতভাগ টিকা নিশ্চিত যত দ্রুত হবে তত দ্রুতই আমরা স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারব। 

তিনি আরও বলেন, এখানের সুবিধা হলো অন-স্পট রেজিস্ট্রেশন করে টিকা গ্রহণ করা যাবে। এক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া জন্ম-নিবন্ধন দিয়ে যে রেজিস্ট্রেশন সেটিও করা হবে। এছাড়া এক ডোজ টিকা যারা নিয়েছেন তারা এখানে এসে যাতে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারেন সে বিষয়টি আমরা বিবেচনায় রাখছি। 

ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান বলেন, এখানে সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত এবং বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষকেই এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা সাধারণত হাসপাতাল বা সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া টিকা কেন্দ্র খোলার অনুমতি দেইনি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এখানে এই টিকা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।  

টিকা নিতে মানতে হবে যেসব শর্ত 

১। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা অন-স্পট নিবন্ধনের মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ ১ম ডোজ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। 

২। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত টিকাকেন্দ্রে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল/ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়/ সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল/ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট) নিবন্ধন করা সত্ত্বেও যারা এখনো টিকা গ্রহণ করতে পারেনি, তারা এনআইডি, শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড এবং টিকাকার্ড প্রদর্শন করে অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রে ১ম ডোজ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। 

৩। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত টিকাকেন্দ্রসমূহ ব্যতীত দেশের অন্য কোনো টিকাকেন্দ্রে নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের সেখানেই টিকা গ্রহণ করতে হবে। তবে দ্রুত টিকাপ্রাপ্তির জন্য একটি তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সুতরাং, তাদেরকে ক্যাম্পে সংরক্ষিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে। 

৪। যারা ইতোমধ্যে এক ডোজ টিকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত টিকাকেন্দ্রে নিয়েছে, মোবাইলে মেসেজ আসা সাপেক্ষে তারা একই টিকার (সিনোফার্ম) দ্বিতীয় ডোজ এই অস্থায়ী ক্যাম্প হতে গ্রহণ করতে পারবেন। 

৫। যেহেতু অন-স্পট নিবন্ধন করতে হলে অপেক্ষমাণ লাইনে থাকতে হবে, তাই টিকাকেন্দ্রে আসার আগেই নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রত্যেককে নিজ নিজ এনআইডি ব্যবহার করে অনলাইনে সুরক্ষা ওয়েবসাইট/ অ্যাপসে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করার সময় জেলা- ঢাকা, উপজেলা- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড-২১ এবং ‘যে কেন্দ্রে টিকা নিতে ইচ্ছুক’ প্রদত্ত অপশনের যেকোনো কেন্দ্র বাছাই করতে হবে। নিবন্ধন সম্পন্ন হলে এনআইডি, শিক্ষার্থীর আইডি এবং টিকাকার্ডটি সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে এসে টিকা গ্রহণ করা যাবে। 

৬। যাদের এনআইডিতে পেশা হিসেবে ‘ছাত্র’ নির্বাচন করা নেই, তাদের টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য একটি তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। সুতরাং, উক্ত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পে সংরক্ষিত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এইচআর/এইচকে