ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হলের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে রাতভর র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা ৫ জনই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্তরা হলেন- ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুলি মারমা ও নাসরিন জাহান খুশি, মার্কেটিং বিভাগের জান্নার নিপো ও রিনাকী চাকমা এবং দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী পূজা দাস।

মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) রাতে রোকেয়া হলের অপরাজিতা বিল্ডিংয়ের ৪ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে এই র‍্যাগিং।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রক্টর।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওইদিন রাত ১টা পর্যন্ত তাদের ওপর নানাভাবে অভিযুক্তরা নির্যাতন করেন। ধমক দেন, গালাগালি করেন এবং অশ্লীল গানে নাচতে বাধ্য করেন। না নাচলে খারাপ কিছু করার হুমকি দেন। এ সময় অভিযুক্তদের মধ্যে একজন বলছিলেন ‘র‍্যাগ দে র‍্যাগ দে, চিল হবে চিল’।

প্রশাসনিকভাবে হলে ওঠেছি বলে প্রতিবাদ জানালে তারা ভুক্তভোগীদের বলেন, ‘প্রশাসন আবার কিসের? আমরা দেই বলে তোরা এখানে থাকতে পারিস, না হয় পারতি না’। এছাড়া র‍্যাগ শেষে অভিযুক্তরা বলেন, ‘প্রভোস্ট ম্যামকে অভিযোগ করবি? ম্যামকে বলে কোনো লাভ নাই। আমাদের কিছুই হবে না।’

ভুক্তভোগীদের মধ্য একজন মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আয়শা আক্তার রিজু। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২৫ অক্টোবর আমার বাবা মারা যায়, আমার মা নেই। এই মানসিক চাপগুলো আমি এখনো সামলে উঠতে পারিনি। তারমধ্যে এই নির্যাতন ভাবতেই পারিনি। আমি এই মুহূর্তে তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছি। আমার সঙ্গে যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে তারা এজন্য দায়ী থাকবে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তিন নম্বর রুমে থাকি আর তারা (ভুক্তভোগীরা) চার নম্বর রুমে থাকে। আমরা প্রায়ই ওদের রুমে যাই, নাচানাচি করি। তারই অংশ হিসেবে কালকে গিয়েছিলাম। তাদের নাচতে বললে তারা নাচতে পারে না বলে জানায়। এরপর আমরা তাদের দুইজনের হাত টেনে একসঙ্গে নাচি, এর বেশি কিছু নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি এবং গ্রহণ করেছি। যেহেতু এটি হলের বিষয়, তাই প্রভোস্টকে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের কথা শুনতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

এদিকে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে বিষয়টির মীমাংসা এবং ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।

এইচআর/এমএইচএস