নানা আয়োজন আর যথাযোগ্য মর্যাদায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা বাঙালী জাতিকে শেষ করে দেওয়ার সর্বশেষ প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সাহচর্যে সেখান থেকে ঘুরে দাড়িয়েছি। দীর্ঘ ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ওপর বালুর স্তর জমেছে। 

কোনো হঠাৎ পরিবর্তন হয় না উল্লেখ করে উপাচার্য আরও বলেন, আমরা সবে এসেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে। চেষ্টা করছি, আস্তে আস্তে সব ধুলোর স্তরকে সরানোর। সময় সুযোগ এবং রাজনৈতিক স্থিরতা এলে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী সবকিছুকেই অপসারণ করব এবং তার স্থলে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে প্রতিস্থাপন করব। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা হাসান আজিজুল হককে আমাদের পাশে রেখেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার স্থাপন করেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান উল-ইসলামের সভাপতিত্বে এ সময় সভার মুখ্য আলোচক ছিলেন অধ্যাপক জুলফিকার মতিন। এ সময় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারের পক্ষ থেকে স্মৃতিচারণ করেন শহীদ সুরঞ্জন সমাদ্দারের স্ত্রী সম্পা সমাদ্দার ও শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, রাবি প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক তারিকুল হাসান, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনীল কুমার সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা বক্তব্য দেন। 

এ ছাড়াও রাবি শিক্ষক সমিতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, বিভাগ, সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এর আগে, দিনের শুরুতে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ভবন, বিভিন্ন আবাসিক হল ও অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সকাল সোয়া ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শহীদ স্মৃতিসংগ্রহশালার পক্ষ থেকে প্রভাতফেরী নিয়ে শহীদ মিনার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন তারা।

এ ছাড়া বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে প্রদীপ প্রজ্বলন, সন্ধ্যা ৬টায় কৌশিক সরকারের নির্দেশনায় নাটক ‘জয়জয়িতা’ মঞ্চস্থ হবে। এরপর  সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ‘সাবাস বাংলাদেশ’ চত্বরে  প্রামাণ্যচিত্র ‘রক্তে যারা শুধলো মায়ের ঋণ’ ও ‘বধ্যভূমিতে একদিন’ প্রদর্শিত হবে।

মেশকাত মিশু/আরআই