প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের ঘর পেয়েছেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ৩০টি পরিবার। উদ্বোধনের ১৬ দিন পার হলেও আশ্রয়ণের ঘরে ওঠার আগ্রহ দেখা যায়নি ১৭টি পরিবারের। তবে তাদের অধিকাংশ জমি থাকতে জমি এবং ঘর থাকতে ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। অনেকে আগের বাড়িতে পরিবারের অন্য সদস্যদের রেখে নতুন বাড়িতে থাকার ইচ্ছাও জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ২৮৭ জনের জমিও নাই ঘরও নাই। তাদের মধ্যে ৩০ জনকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় জমি ও ঘর দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও ৪০ জনের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

দীঘা ইউনিয়নে ঘর পাওয়া আবু বক্কার মন্ডল বলেন, বর্তমানের নতুন ঘরের কী অবস্থা, আমি জানিনে। বাপ-দাদা সূত্রে আউনাড়া গ্রামে জমি পাইছিলাম। এখানে আমার বাড়ি আছে। এখানেই থাকি। একটা ছেলে আছে, সে বাড়ি থাকে না। এখানে (আগের বাড়িতে) আমাগেরই থাকতে হবেনে। তবে দুই জাইগায় এখন থাকতে পারব।

সরেজমিন নতুন ঘর পাওয়া এলাকায় দেখা যায়, অনেকে ঘরে তালা মেরে রেখে আগের ঠিকানায় থাকেন। অনেকের ঘরের দরজা-জানালা খোলা রয়েছে। ভেতরে কোনো মালামাল দেখা যায়নি। সেসব পরিবার প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীন তারা উপহার পাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা নিয়ে ঘরে উঠেছেন।

নতুন ঘর পাওয়া একটি পরিবারের সন্তান ডালিম শেখ এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, আমাদের বাড়ি আছে বিলখানিদাহ। আমরা এইখানেই থাকবানি। উত্তরাধিকার সূত্রে আমার বাবা জমি পায়। তবে জমির পরিমাণ কম। সে রাতে বাড়িতে থাকে আর দিনে দেখাশোনার জন্য নতুন ঘরের ওইখানে যায়। নতুন ঘর পাওয়া আরও পাঁচ-সাতটি পরিবার তাদের জমি ও ঘর থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

তবে ঘরে ওঠা এক নারী জোসনা বেগম জানান, আমার থাকার কোনো জায়গা নেই। তাই পানি-বিদ্যুতির সমস্যা থাকতিও আমি সব নিয়ে আইছি। আমার মতো তো সবার অবস্থা না। আমার এখানে সংসার করতে হবে। আমি ছাড়া এখানে (দীঘা ইউনিয়নে) কেউ ওঠেনাই। তাগার ঘরে (নতুন ঘরে) ওঠার আগ্রহ নাই। তারা দেখাশোনার জন্য আমারে ঘরের চাবি দিতি চায়। তাগার বাড়িঘর সংসার সব আছে। এর থেকে সেখানে ভালো অবস্থা।

হাফিজার মোল্যাসহ অনেকে অভিযোগ করে জানান, শিরিনা নামের এক মেয়ে জমি নাই ঘর নাই। বাপের বাড়ি পড়ে থাকে। তারা ঘর পায় না অথচ যাদের অবস্থা ভালো তারা ঘর পাইছে। তবে কয়েকজন পানি ও বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান হলে ঘরে উঠবেন বলে জানিয়েছেন।

বাবুখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব আব্দুল কাদের জানান, বাবুখালীর ১০টি ঘরের কেউই এখনো ঘরে ওঠেননি। পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যা ঠিক হলে তারা আসবেন বলে জানিয়েছেন।

ঘর বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘জমিও নাই ঘরও নাই’-এর তালিকা সাবেক ইউএনও যাচাই-বাছাই করেছেন। আমরা এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়ন থেকে যারা ঘর পেতে আগ্রহী, তাদের ঘর দিয়েছি। তবে তাদের পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা খুব শিগগিরই সমাধান করা হবে।

জালাল উদ্দিন হাককানী/এনএ