বাংলাদেশ সময় গত বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে থাকা পণ্যবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলা চালানো হয়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। সমুদ্র তীরে নোঙর করা জাহাজটিতে বাকি ২৮ জন নিরাপদে রয়েছেন। তাদের একজন কুষ্টিয়ার ফয়সাল আহমেদ সেতু (২১)। তিনি জাহাজটির ডেক ক্যাডেট হিসেবে কর্মরত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেতু নিজেই। 

ফয়সাল আহমেদ সেতু কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ইউনিয়নের সালিমপুর গ্রামের ঈদগাহ পাড়ার ফারুক বিশ্বাসের ছেলে। তার বাবা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। 

এ বিষয়ে সেতুর বাবা ফারুক বিশ্বাস বলেন, ছেলের জন্য আমাদের খুব ভয় হচ্ছে। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই তারা সবাই যেন নিরাপদে থাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করছি। কিছুক্ষণ আগে ছেলের সাথে কথা হয়েছে। সে বলেছে, আব্বা টেনশন কইরো না, আমরা ভালো আছি।

সেতুর বাবা আরও বলেন, গত চার মাস আগে বাংলাদেশ থেকে বিমান যোগে প্রথমে তুরস্কে যাই সেতু। সেখান থেকে বিভিন্ন দেশ ঘুরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে যায়। সেতু এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০টি দেশে গেছে। 

ফয়সাল আহমেদ সেতু বলেন, এখন আমরা ভালো আছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বর্তমানে আমাদের পর্যাপ্ত খাবার মজুদ রয়েছে। কিন্তু দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে বিপদে পড়তে হবে। যে পরিমাণ খাবার মজুদ রয়েছে তা অল্প কয়েক দিনেই শেষ হয়ে যাবে। খাদ্য শেষ হয়ে গেলে আমরা বড় বিপদে পড়তে পারি। 

সেতুর মা টলি খাতুন বলেন, ছেলে জানিয়েছে সে ভালো আছে। তবুও ছেলের জন্য আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি। সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন সবাইকে বিপদমুক্ত রাখেন, নিরাপদে রাখে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমার ছেলেসহ সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে ২৯ সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি অলিভিয়া সৈকতে আটকা পড়ে। সেখানে এরই মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বাংলাদেশি যুবক হাদিসুর রহমান আরিফের (৩৪) মৃত্যু হয়েছে। 

রাজু আহমেদ/আরআই