আদালতের সমন অবজ্ঞা করায় এক টাকা জরিমানা করা হয়েছে পাবনার আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলীকে। অনাদায়ে আদালত চলাকালীন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরের দিকে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই দণ্ডাদেশ দেন। তবে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করায় শেষ পর্যন্ত কারাবরণ করতে হয়নি ওসি রওশন আলীকে।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাক্ষ্য দিতে আসার জন্য বারবার সমন পাঠানো হলেও ওসি রওশন আলী অবজ্ঞা করেছেন।

এর আগেও আরেকটি মামলায় আদালতের সমন অবজ্ঞা করেন ওসি রওশন। পরে এ নিয়ে আদালতের কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন তিনি। সেই যাত্রাই আদালত তখন তাকে ক্ষমা করেন।

একই কায়দায় মঙ্গলবারও আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ওসি। কিন্তু আদালত মনে করেন কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুশোচনা নেই ওসির। আর এ জন্যই তাকে এক টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। পরে আদালতের পেশকার হেমন্ত বর্মনের কাছে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেন তিনি। পেশকার সেই অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করেন।

আদালতের পেশকার হেমন্ত বর্মন জানান, ২০১৮ সালে ৬ আগস্ট নিরাপদ সড়ক চাই-এর আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এক যুবককে আটক করে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এ নিয়ে তৎকালীন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রওশন আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

আদালত তদন্ত কর্মকর্তাসহ সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেন। ইনফরমেন্ট সাক্ষী হিসেবে বাদী রওশন আলীকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পর পর ছয়বার সমন পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি আদালতে আসেননি। পরে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রওশন আলীর মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে সমনের ছবি পাঠান। এতেও সাড়া দেননি ওসি। শেষ পর্যন্ত তিনি সাক্ষ্য দানে বিরত থাকেন। 

ফলে মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান আদালত। এরপর মামলার নির্ধারিত দিনে মঙ্গলবার আতালতে হাজি হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। কিন্তু আদালত ক্ষমা না করে তাকে অর্থদণ্ড প্রদান করেন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরআই