ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মৃত্যু, শোকে স্তব্ধ স্বজনরা
ভারতের কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের একটি আবাসিক হোটেলে আগুনে পুড়ে শামীমাতুল আরশ বিজেলী (৬০) নামে এক বাংলাদেশি নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। অভিভাবক হারিয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না ছেলে সারাফাত হোসেন ও স্বজনরা।
শামীমাতুল আরশ বিজেলী চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের পার কানসাট গ্রামের মোশারফের স্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৯ মার্চ হার্টের চিকিৎসার জন্য ছেলে লাবিবকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের কলকাতায় গিয়েছিলেন শামীমাতুল আরশ। এরপর রাতে থাকার জন্য কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের একটি হোটেলে উঠেন তারা। কিন্তু শনিবার ভোরে সেই হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে শামীমাতুল নিহত হন। স্বজনদের আহাজারিতে স্তব্ধ পুরো গ্রাম।
শামীমাতুল আরশ বিজেলীর মেয়ে মোয়াজেম্মা বেগম বলেন, গত তিন মাস থেকে মা একটু অসুস্থ। সামনে রোজা তাই মা আমাকে বলছিলেন, আমি তো রোজা করব। কিন্তু এই অসুস্থ শরীরে কেমন করে রোজা করব। তখন আমি বললাম, তাহলে তুমি ভারতে গিয়ে ভালো চিকিৎসক দেখিয়ে এসো। এ কথা শুনে মা চিকিৎসার জন্য গত ৯ মার্চ আমার এক ভাইকে নিয়ে কলকাতা গিয়েছিলেন। কিন্তু গত শনিবার ভোর ৪টার দিকে খবর পাই, আমার মা আর নেই। হোটেলে আগুন লেগে আমার মা মারা গেছেন।
বিজ্ঞাপন
ছেলে সারাফাত হোসেন বলেন, এর আগেও মা ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। সেবার ভালো হয়ে ফিরেছিলেন। কিন্তু এবার ঘটল ভিন্ন ঘটনা। ভালো অবস্থায় গিয়ে জীবনটায় হারিয়ে ফেললেন। আমাদের আশ্রয়স্থল আর থাকল না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, মাকে তো হারিয়ে ফেলেছি। শত চেষ্টা করেও আর ফিরবে না। তাই দুই হাত বাড়িয়ে অপেক্ষা করছি শেষবারের মতো মায়ের মুখটা দেখব বলে। তাকে নিজ হাতে দাফন করব বলে।
কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেনাউল ইসলাম বলেন, কলকাতায় একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু এতে যে আমার ইউনিয়নের একজন রয়েছে তা জানা ছিল না। আপনি বললেন, এখন খোঁজ নিচ্ছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মাহবুব আলম খান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে।
জাহাঙ্গীর আলম/এসপি