দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে নদী পারের অপেক্ষায় শত শত যানবাহন মহাসড়কে অলস সময় পার করছে। ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ৫ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরেই দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজট অব্যহত রয়েছে। দিন দিন আটকে থাকা ট্রাকের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে এই রুটে যাতায়াতকারী বাসের যাত্রী, ট্রাকের চালক ও সহকারীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

জানা গেছে, পদ্মায় পানি কমে যাওয়ায় বিভিন্ন চ্যানেলে ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় ফেরি চলাচল ব্যহত হচ্ছে। ফলে উভয় ঘাটেই ফেরি ভিড়তে স্বাভাবিক সময়ের থেকে বেশি সময় লাগছে। এতে উভয় প্রান্তে প্রতিদিনই গাড়ির সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে। তাদের ১ ঘণ্টার নদী পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ২০ থেকে ২৪ ঘণ্টার মতো।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার জুড়ে যানবাহনের লম্বা সারি। সারিতে অপেক্ষামাণ যানবাহনগুলোর মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যাই বেশি। এসব পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলোর ফেরির নাগাল পেতে দিনের পর দিন মহাসড়কে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রচন্ড গরম ও খোলা আকাশের নীচে রোদের তাপে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এসব ট্রাকচালকদের।

ঘাট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় ১৯টি ফেরি চলাচল করছে। এ ছাড়া ৭টি ফেরিঘাটের মধ্যে ৪টি ঘাট (৩,৪,৫ ও ৭) দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তবে ১ ও ২ নম্বর ঘাট আগেই বন্ধ ছিল। নতুন করে নদীতে নাব্যতা-সংকটের কারণে ৬ নম্বর ঘাটটিও বন্ধ। সচল থাকা ঘাটগুলোর মধ্যে দু-একটি ঘাট বিভিন্ন কারণে কিছু সময় বন্ধ থাকছে। পানি কমে যাওয়ায় ফেরিঘাটের পকেট পথগুলো নিচু হয়ে গেছে। 

আটকে থাকা ট্রাকচালক হাবিবউল্লাহ বলেন, ১৯ ঘণ্টা হয়ে গেল ফেরির জন্য অপেক্ষা করছি। এখনো ঘাট থেকে ২ কিলোমিটার দূরে আছি। প্রচন্ড রোদ আর ভ্যপসা গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশে গোসল-টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকায় আরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন দিনের সরকারি ছুটির কারণে ঘাট এলাকায় অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। এ ছাড়া নদীতে নাব্যতা সংকট, ঘাট স্বল্পতা, অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক দিক দিয়ে ঘাট এলাকায় সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। তবে যাত্রীবাহী বাস ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে।

মীর সামসুজ্জামান/আরআই