অপরিকল্পিত নদী খননে ভাঙছে সড়ক
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে অপরিকল্পিতভাবে চত্রা নদী পুনঃখননের ফলে ভাঙনের কবলে পড়েছে সড়ক
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়ায় অপরিকল্পিতভাবে চত্রা নদী পুনঃখননের ফলে সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সড়ক ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে এলাকার মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭.৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭০০০ কি.মি. খালটি পুনঃখনন করেন নূনা ট্রেডার্স।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের খাটিয়াগাড়া, চরঘিকমলা, বাকসাডাঙ্গী, ঘিকমলা, মরাবিলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বালিয়াকান্দি বাজার থেকে লাঙলবাঁধ সড়কের ও বালিয়াকান্দি-পাংশা সড়কের বাকসাডাঙ্গি, চরঘিকমলা, খাটিয়াগাড়া এলাকায় দুইটি সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খাটিয়াগড়া ও চরঘিকমলা চত্রা নদীর ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজের দুপাশেও ভেঙে গেছে। ব্রিজটিও রয়েছে চরম ঝুঁকিতে।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, নারুয়া বাজার থেকে মরাবিলা সড়কটি ভেঙে নদীগর্ভে চলে যাওয়ার ফলে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটা ও স্থানীয় লোকজনের কাছে বিক্রি করায় এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় সরকারি সড়ক ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ফলে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চত্রা যেভাবে গভীর করে খনন করা হয়েছে তার কোনো প্রয়োজন ছিল না। তারপরও তা খনন করা হয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদীর দুই পাড়ে ভাঙন দেখা যায়। নদীর পানি কমে যাওয়ায় পাকা সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা একটি উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে যেন আরেকটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে টেকসই উন্নয়ন করতে হবে। চত্রা নদী খননের ক্ষেত্রে তার বিপরীত ঘটনা ঘটেছে। এটা সরকারের প্রতিনিধিদের খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
নারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মাস্টার বলেন, চত্রা নদী পানি উন্নয়ন বোর্ড খনন করার পর থেকেই নদীর দুপাড়ের গ্রাম বাকসাডাঙ্গী, চরবিলধামু, চরটাকাপোড়া, চরঘিকমলা, খাটিয়াগড়া, ঘিকমলা, মরাবিলা গ্রাম এলাকায় ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের ফলে এলজিইডি কতৃক নির্মিত পাকা সড়ক সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে এসকল এলাকায় মানুষের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এলাকাটি কৃষি প্রধান হওয়ার কারণে কৃষকের উৎপাদিত ফসল মাঠ থেকে বাড়িতে আনা এবং বাজারে বিক্রি করতে যেতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়াও গড়াই নদী ভাঙনের কারণে নদী তীরবর্তী মরাবিলা, জামসাপুর, কোনাগ্রাম, নারুয়া, বাকসাডাঙ্গী, সোনাকান্দর, বাঙ্গরদাহ এলাকার বেড়িবাঁধ, ফসলি জমি,পাকা রাস্তা, বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
মীর সামসুজ্জামান/এসপি