ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে আসছে অত্যাধুনিক লঞ্চ জমজম-৭
যাত্রীদের চাহিদা মেটাতে প্রতিনিয়ত নৌবহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন লঞ্চ। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে আসছে অত্যাধুনিক লঞ্চ এমভি জমজম-৭। দীর্ঘদিন পুরোনো নৌযানে আস্থা থাকলেও অবশেষে জমজম নেভিগেশন বহরেও যুক্ত হচ্ছে নতুন লঞ্চ। শুধুমাত্র নতুন লঞ্চ তৈরিই নয়, বদলে ফেলা হয়েছে পুরো লঞ্চের কাঠামো।
ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে জমজমের চাহিদা শুরু থেকেই। কাছাকাছি সময়ে একাধিক নতুন লঞ্চের আগমন ঘটলেও নীরবেই সেবা দিয়ে গেছে জমজম। তবে এবার রুটের অন্যতম সেরা নৌযান নিয়ে চাঁদপুর মাতাতে তৈরি হচ্ছে বহরের ৪ তলা বিশিষ্ট আপকামিং ফ্ল্যাগশিপ জমজম-৭ যাত্রীবাহী লঞ্চ।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, চারটি ভিআইপি, আটটি ডিলাক্স/ফ্যামেলি, ১৮টি ডাবল ও ৪৭টি সিঙ্গেল কেবিন নিয়ে সাজানো হয়েছে লঞ্চটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কেবিন বিন্যাস। এছাড়াও ২ তলার সম্মুখভাগে থাকবে বিজনেস ক্লাস চেয়ার। চতুর্থ তলায় হুইল ব্রিজসহ থাকবে স্টাফ কেবিন। তবে লঞ্চের কেবিন এরিয়াতে কোনো কমন বারান্দা থাকছে না। এর বিকল্প ব্যবস্থা স্বরূপ একাধিক প্রশস্থ এয়ার পাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যা ব্যবহৃত হবে শুধুমাত্র কেবিন যাত্রীদের জন্যই। যাত্রীরা ওপেন ডেকের সুবিধা পাবেন তৃতীয় তলার পেছনের অংশে এবং ২ ও ৩ তলার ফ্রন্ট ডেক থাকবে কমন বারান্দা হিসেবে। রয়েছে পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থাও।
বিজ্ঞাপন
মুন্সীগঞ্জ শিপ বিল্ডার্সের অধীনে নির্মিত এই লঞ্চের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ ভাগে। মূল কাঠামোর কাজ শেষ করে এখন অভ্যন্তরীণ ক্যাবল ওয়ারিং ও সিলিং ডেকোরেশনের কাজ চলছে। ইঞ্জিন রুমে চলছে ইঞ্জিন স্থাপনের শেষ অংশের কাজ। ইঞ্জিনের কাজ চলমান থাকায় এর বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। তবে ইঞ্জিন ফিটারের ভাষ্যমতে- প্রায় ১৪৫০ হর্স পাওয়ারের একজোড়া ডাইহাটসু ইঞ্জিন স্থাপন করা হচ্ছে। ইঞ্জিনের সঙ্গে থাকছে ৩.৫ গিয়ারের কম্বিনেশন।
জমজম লঞ্চের মালিকের প্রতিনিধি বিল্পব সরকার বলেন, এটি চাঁদপুরের মধ্যে সর্বোচ্চ আধুনিক লঞ্চ হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা বিলাসবহুল লঞ্চ। প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কাজের গতি ঠিকঠাক মত চললে আগামী ঈদুল আজহায় নৌযানটি সার্ভিসে আসবে। বাকিটুকু সময়ের হাতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীসেবায় এই লঞ্চটি চালু করা হয়েছে। আশা করি যাত্রীরা, জম জম-৭ লঞ্চে আরামদায়ক ভ্রমণ করতে পারবেন।
জাকির বেপারী ও আবু কাউসারসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী বলেন, চাঁদপুর নৌরুট দিয়ে বিভিন্ন জেলার মানুষ যাতায়াত করে। যাত্রীদের জন্য আধুনিক নৌযান প্রয়োজন। যদিও চাঁদপুরের নৌযানগুলো ভালো মানের। আমরা চাই বিশ্বের আধুনিক নৌযানের মতো এখানেই যাতে নৌযান তৈরি করা হয়।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক মো. কায়সারুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে চলাচলকারী সব লঞ্চের ফিটনেস রয়েছে। এখানে খুব ভালোমানের লঞ্চ চলাচল করে। এমভি জমজম-৭ লঞ্চটি চাঁদপুরে যুক্ত হবে কিনা আমার জানা নেই। এখানে আধুনিক লঞ্চ চালু হলে যাত্রীসেবার মান আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে কোনো ধরনের ফিটনেসবিহীন লঞ্চ চলাচল করতে দেওয়া হয় না। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ রুটে ছোট লঞ্চ চলাচল এখনো বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ছোট লঞ্চ চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
শরীফুল ইসলাম/আরএআর