গত ১১ মার্চ ভোরে বরুড়ার ডেউয়াতলী এলাকায় আগুনে পুড়ে নিহত হন ইয়াসমিন

কুমিল্লার বরুড়ায় আগুনে পুড়ে নববধূ ইয়াসমিন বেগম মৃত্যুর ঘটনাটি দুর্ঘটনা নয়। বরং কথাকাটাকাটির পর ইয়াসমিনের স্বামী তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘরে আগুন লাগিয়ে দুর্ঘটনার নাটক সাজান তিনি।  

ইয়াসমিনের স্বামী রেজাউলকে গ্রেপ্তার করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এ কথা বলছে র‌্যাব। র‌্যাব-১১ এর সিপিসি ২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এসব তথ্য দিয়েছেন। 

গেল সোমবার রাত ৯টায় কুমিল্লা ইপিজেড এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, গত ১১ মার্চ ভোরে বরুড়ার ডেউয়াতলী এলাকায় আগুনে পুড়ে নিহত হন ইয়াসমিন। ১২ মার্চ তার ভাই  রাকিব এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন।

রেজাউল করিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, পারিবারিক কলহ ও যৌতুক দিতে না পারায় প্রায় সময় স্ত্রীকে মারধর করতেন রেজাউল। গত ১২ মার্চ কথা কাটিকাটির এক পর্যায়ে রেজাউল ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ইয়াসমিনকে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ইয়াসমিনের শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে মসজিদে চলে যান তিনি।

স্থানীয়দের সঙ্গে রেজাউল নিজেও আগুন নেভানোর কাজে লেগে যান। আসলে আগুন তিনিই দিয়েছিলেন।   

নামাজ শেষে স্থানীয় লোকজনের আগুন লাগার বিষয়ে কোনো আওয়াজ না পাওয়ায় তিনি জিয়ারতের উদ্দেশ্যে পারিবারিক কবরস্থান চলে যায়। রেজাউল কবরস্থানে থাকা অবস্থায় টের পান স্থানীয় লোকজন আগুন লাগার খবর পেয়েছে। এরপর স্থানীয়দের সঙ্গে তিনি নিজেও আগুন নেভানোর কাজে লেগে যান।  

তিনি বলতে থাকেন, ঘরের ভেতর তার স্ত্রী ও বিদেশ যাওয়ার সব কাগজ-পত্রসহ টাকা-পয়সা রয়েছে। বিষয়টি বলতে বলতে রেজাউল জ্ঞান হারানোর ভান করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন এবং তার স্ত্রীর জানাজা শেষে হাসপাতাল থেকে আত্মগোপনে চলে যান।

অমিত মজুমদার/এনএফ