মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া গ্রামে মো. সুমন হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। তার পরিবারের দাবি, আইপিএল ক্রিকেটে নিয়ে জুয়া খেলায় টাকা হেরে পাওনাদারদের চাপের মুখে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সুমন। শনিবার গভীররাতে বাঘড়ার গোয়াল বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত সুমন হোসেন ওই এলাকার মৃত আক্তার হোসেনের ছেলে। রোববার (৩ এপ্রিল) সকালে বাঘড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই ইলিয়াস ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেন। এরপর দুপুরের দিকে সুমনের মরদেহ মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। 

স্থানীয়রা জানান, সুমন ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় লুঙ্গি পেঁচিয়ে ফাঁস দেন। তার ২ ছেলে ও এক মেয়ে আছে। 

জানা গেছে, সুমন হোসেন ৪ বছর আগে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন। দেশে এসে সুমন আইপিএল ও বিভিন্ন টুর্নামেন্ট নিয়ে জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন। এলাকায় আইপিএল নিয়ে জুয়া খেলার একাধিক সিন্ডিকেট রয়েছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা মোবাইল ফোন ও আ্যাপস-এর মাধ্যমে জুয়ার টাকা লেনদেন করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, ক্রিকেট জুয়া সিন্ডিকেটটির অন্যতম সদস্য বাঘড়া বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী উত্তম দাস। তার দোকানে জুয়ার টাকার লেনদেন হয়।

এ বিষয়ে জানতে উত্তম দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সুমনকে চিনি না। আমার দোকানে কোনো লেনদেন সুমন কখনো করেনি।

সুমন আত্মহত্যা করেছে এই বিষয়ে জানেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সকালবেলা শুনেছি সে আত্মহত্যা করেছে। আপনি তাকে চিনেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ চিনি, অনেক দিন আগে একবার এসেছিল আমার দোকানে টাকা বিকাশ করতে। ওরে আমি আমাদের শ্রীনগর বিকাশের হেড অফিসে যোগাযোগ করতে বলেছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নুর জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি লোকমুখে শুনেছি ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলার সঙ্গে উত্তমের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এলাকার অনেকেই তা জানেন।

সুমনের স্ত্রী নার্গিস বেগম বলেন, আইপিএল জুয়া খেলা নিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে প্রায় সময়ই মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যেত সুমনকে। প্রথম রোজার সাহরি খেতে উঠে দেখি ফাঁস দেয়া অবস্থায় ঘরের আড়ার সঙ্গে স্বামীর দেহ ঝুলে আছে।

এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা দায়ের হয়েছে। 

ব.ম শামীম/এমএএস