কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এক কেজি সবজির দাম যশোর-রাজশাহীতে ৩০ টাকা বিক্রি হলেও পথের বাধা-বিপত্তির কারণে ঢাকায় গিয়ে সেই সবজির দাম হয়ে যায় প্রতি কেজি ৯০ টাকা। এ বাধা কীভাবে দূর করা যায়, সে ব্যাপারে ভূমিকা রাখব। 

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের সফল চাষি সাহিদা বেগমের পেঁয়াজের বীজ ক্ষেত পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

কৃষিমন্ত্রী বলেন, পথের বিপত্তিগুলো দেখার জন্য এসেছি। আজ রাজবাড়ীতে এ নিয়ে সভা আহ্বান করেছি। সেখানে সবাইকে ডেকেছি। সেখানে এ অঞ্চলের কৃষক প্রতিনিধি, ট্রাকচালক, পাইকারী বিক্রেতা, মহাজনদের ডেকেছি। আমি কৃষিমন্ত্রী, আমাকে সব কৃষিজাত পণ্য নিয়ে ভাবতে হয়, সব বিষয় দেখতে হয়।

তিনি বলেন, আমি দেখব, কীভাবে পথের এ বিপদ থেকে আমরা উদ্ধার পেতে পারি। সবার কাছ থেকে মতামত নেব। কৃষিপণ্য বিপণনে পথের কী ঝামেলা আছে, সামাজিক-রাজনৈতিক যে সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা আছে, মানুষের ওপর কী জাতীয় নির্যাতন ও নিপীড়ন আছে এবং তা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, সে উদ্যোগ নেব।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের বীজ করতে গিয়ে কৃষকদের কী ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়, কী সংকটে পড়তে হয় এবং কৃষক কীভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন করে আরও লাভবান হবে তা দেখতে ও জানতেই সরেজমিনে আমার এই আসা।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে পেঁয়াজ ও পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনে যাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় সে ব্যাপারে আমরা কী ধরনের কর্মসূচি নিতে পারি তা দেখতে এসেছি। মাঠের সমস্যাগুলো দেখার জন্য এসেছি। যে কৃষক পেঁয়াজ আবাদ করে তাদের সমস্যার কথা বুঝতে ও জানতে এসেছি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়া পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য অনুকূল ও উপযোগী। তবে সমস্যা হচ্ছে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা কষ্টকর। দ্রুত পচে যায়। আবার মৌসুমে দাম পড়ে যাওয়ায় কৃষক সঠিক মূল্য পায় না। আলু আমরা সংরক্ষণ করতে পারি, কিন্তু এমন প্রযুক্তি আমরা এখনও রপ্ত করতে পারিনি যাতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবির, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, অতিরিক্ত পরিচালক স্বপন কুমার খা, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হজরত আলী, জেলা বাজার কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, সাহিদা বেগম ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত বেশ কয়েক বছর ধরে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করে সাহিদা সুনাম অর্জন করেছেন। সফল চাষি হিসেবে পেয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি অনেক পুরস্কার।

জহির হোসেন/আরএআর