উত্ত্যক্তের অপমান সহ্য করতে না পেরে শান্তনা সরকার (৩৮) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করে বলেছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শনিবার দুপুরে মনিরামপুর থানা পুলিশ গৃহবধূর মরদেহ থানায় আনলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

গৃহবধূ শান্তনা সরকার যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বাহিরঘরিয়া গ্রামের উত্তম কুমার সরকারের স্ত্রী। 

গৃহবধূর স্বামী উত্তম কুমার সরকার জানান, তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মাস দেড়েক আগে প্রতিবেশী মৃত জব্বার গাজীর ছেলে মহিরউদ্দীন চালের কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে তার কাছে ভোটার আইডি কার্ড ও মোবাইল ফোন নম্বর চান। তিনি নিজে মোবাইল ব্যবহার না করায় স্ত্রীর কাছ থেকে নিতে বলেন। ভোটার আইডি কার্ড ও ফোন নম্বর নেওয়ার পর থেকে স্ত্রীকে প্রায়ই ফোন করে কু-প্রস্তাবসহ নানা ধরনের অশ্লীল কথা বলে আসছিল। যা স্ত্রীর মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা আছে। 

তার স্ত্রী এসব কথা তাকে জানালে তিনি বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন, স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তারকে জানান। তারা মহিরউদ্দীনকে সতর্ক করার পরও ফোনে উত্ত্যক্ত করা থেকে বিরত থাকেননি। এক পর্যায়ে স্ত্রী মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। 

ঘটনার দিনও স্ত্রীর ব্যবহৃত ফোনে মহিরউদ্দীন ফের কুপ্রস্তাবসহ অশ্লীল কথা বলে। এক পর্যায়ে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে স্ত্রী অপমান সহ্য করতে না পেরে কীটনাশক পান করে। এরপর তাকে প্রথমে মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। 

স্থানীয় গোপালপুর বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুস সাত্তার জানান, ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী উত্তম কুমার তাকে বিষয়টি অবহিত করলে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন জানান, ২০ দিন আগে ওই গৃহবধূর স্বামী বিষয়টি তাকে জানালে তিনিও আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন।

একাধিক গ্রামবাসী জানান, মহিরউদ্দীনের বিরুদ্ধে নারীঘটিত একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এ ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য মহিরউদ্দীনের নম্বরে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, প্রাথমিকভাবে কোতোয়ালি থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাহিদ হাসান/এসপি