সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় বন্ধুকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে কলেজছাত্র মোবাশির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১২টায় জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান।

দণ্ডপ্রাপ্ত মোবাশির হোসেন (২৩) আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের আব্দুল মজিদ মোড়লের ছেলে। সে আশাশুনি ডিগ্রী কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের শঙ্কর সরকারের ছেলে চন্দ্রশেখর সরকার ও একই গ্রামের মোবাশির হোসেন ছোট বেলা থেকেই একসঙ্গে লেখাপড়া করত। একই সাথে এসএসসি পাশ করার পর চন্দ্রশেখর সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ ও মোবাশির হোসেন আশাশুনি ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয়। 

নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন মোবাশিরের সঙ্গে একই গ্রামের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ইন্দ্রানী ঘোষ ওরফে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একজন হিন্দু মেয়ের সঙ্গে একজন মুসলিম যুবকের প্রেম মেনে নিতে পারেনি চন্দ্র শেখর। পাপিয়ার সঙ্গে দেখা করিয়ে না দিলে বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয় চন্দ্র শেখর। 

এক পর্যায়ে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ি থেকে চন্দ্র শেখরের ঘেরের বাসায় এসে দীর্ঘক্ষণ গল্প করে মোবাশির। রাত ১২টার পর চন্দ্র শেখরকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়।

মামলায় বিবরণে আরও জানা গেছে, ১৯ অক্টোবর ঘের থেকে চন্দ্র শেখরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০ অক্টোবর নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। মামলায় বন্ধু মোবাশিরকে আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। মোবাশির পাপিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ঘিরে বন্ধু চন্দ্র শেখরকে শ্বাসরোধ করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জজ আদালতের পিপি আব্দুল লতিফ জানান, মামলার নথি ও ১৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামির বিরুদ্ধে হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টার অভিযোগে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে, আরও দুই বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। মামলার আসামি পলাতক রয়েছে। 

আকরামুল ইসলাম/আরআই