ভোট শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন।
ঠাকুরগাঁওয়ে পৌরসভা নির্বাচনের ভোট শেষ হওয়ার আগেই অগ্রিম ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন।
তিনি বলেন, বেলা ১১টার পর থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ তথা নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা বিএনপির পোলিং এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে। তাদের পুলিশের লোকেরা সহযোগিতা করছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। কিন্তু যা শুরু হয়েছে তাতে বুঝা যায় কী হতে পারে। এরপরও আমরা ভোটের শেষ পর্যন্ত থাকবো। কিন্তু ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলাম।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচনে রোববার সকাল ৮টা থেকে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ও রাণীশংকৈল পৌরসভায় ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক) আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা, বিএনপির শরিফুল ইসলাম শরিফ (ধানের শীষ) ও ইসলামী বাংলাদেশের আনোয়ার হোসেন (হাতপাখা)।
অপরদিকে রাণীশংকৈল পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মোস্তাফিজুর রহমান (নৌকা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলমগীর সরকার (ক্যারাম বোর্ড), আব্দুল খালেক (জগ), নওরোজ কাউসার কানন (চামুচ), রফিউল ইসলাম (কম্পিউটার), ইসতেখার আলী (মোবাইল ফোন), সাধন বসাক (নারিকেল গাছ), রুকুনুল ইসলাম ডলার (রেল ইঞ্জিন), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুন নবী পান্না বিশ্বাস (ধানের শীষ), বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মোখলেসুর রহমান (হ্যাঙ্গার), জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আলমগীর হোসেন (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোকাররম হোসাইন (ইস্ত্রি) ।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় সকালে সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে প্রথম ভোট দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বন্যা। অপরদিকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শরিফুল ইসলাম শরিফ।
জেলা নির্বাচন অফিসের দেয়া তথ্য মতে, ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় ১৮৬টি কক্ষে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৬০ হাজার ৭২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২৯ হাজার ৭১২ জন ও নারী ভোটার সংখ্যা ৩১ হাজার ১৫ জন।
অপরদিকে রাণীশংকৈল পৌরসভায় ৯টি কেন্দ্রে ৪০টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭০২ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৭ হাজার ৩১২ জন ও পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৩৯০ জন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামানু জানান, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, বিজিবি, র্যাব মোতায়েনসহ তিনটি ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেকটি কেন্দ্রে চারজন করে সশস্ত্র পুলিশ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে দেশের ২৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় ও তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে দেশের ৩১টি পৌরসভায় নির্বাচন হবে।
তিন ধাপে আওয়ামী লীগের ৬৯ জন, বিএনপির ৯ জন ও স্বতন্ত্র ২৫ জন প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচনে মেয়র পদে তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৬ জন, বিএনপির তিনজন ও স্বতন্ত্র ১৪ জন বিজয়ী হন।
দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৫ জন, বিএনপির চারজন, জাতীয় পার্টির একজন, জাসদের একজন ও আটজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।
প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১৮ জন, বিএনপির ধানের শীষের দুইজন এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।
নাহিদ রেজা/আরএআর