সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। দুপুর থেকে ওই কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল থেকে আশুলিয়ার দক্ষিণ গাজীরচটের রশিদ মার্কেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করছেন ঢাকাটেক্স নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা জানান, গত ডিসেম্বর মাস থেকে প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক নিয়ে উৎপাদন শুরু করে ঢাকাটেক্স পোশাক কারখানা। জানুয়ারি মাস থেকেই বেতন পরিশোধ না করে টালবাহানা শুরু করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। ফেব্রুয়ারি মাসেও একই অবস্থা। পরে শ্রমিকরা আন্দোল করলে গত ১৩ মার্চ প্রায় ৪০ জন শ্রমিককে কারখানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে শ্রমিক সংগঠন, পুলিশ ও শ্রমিকদের সাথে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। এই বৈঠকে মার্চের ২৮ তারিখে বেতন-ভাতা বুঝিয়ে দেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। 

তবে ২৮ তারিখেও তারা বেতন না দিয়ে আবার ৭/৮ এপ্রিল বেতন দেওয়ার তারিখ দেয়। এভাবেই সময় ক্ষেপন করতে থাকে কর্তৃপক্ষ। পরে সুযোগ বুঝে কারখানার মালামাল বের করে নিয়ে যায় কারখানা কর্তৃপক্ষ। আমরা এখন কারও সাথে যোগাযোগও করতে পারছি না।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিক শাওন বলেন, ঈদের এখনো কিছুই কিনতে পারিনি। বাড়ি যাওয়ার ভাড়াটাও হাতে নাই। আমাদের বেতনই দিচ্ছে না। বোনাসের টাকা পাবো কি না সন্দেহ। মালিকপক্ষ অনেক শ্রমিককেই অল্প কিছু করে বেতন দিয়ে ফেলেছন। কিন্তু প্রায় ৪০ জন শ্রমিককে এক টাকাও দেয়নি। উপরন্ত মালিক পক্ষ গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। আমাদের ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে যাচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ ব্যাপারে কারখানার চেয়ারম্যান মুনসুর আলী বলেন, আমরা বেশিরভাগ শ্রমিকদের বেতন দিয়েছি। শুধু রিজাইন-টিজাইনের শ্রমিকরা বাকি আছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপার ও বিল্ডিং মালিকের সাথে কথা হয়েছে। দশ হাজার টাকা দিয়ে দিচ্ছি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ বিষটি মেকআপ করবে।

এ ব্যাপারে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বলেন, শ্রমিকদের বেতন-বোনাস না দিয়ে ঈদের আগে মালিক পালিয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই অমানবিক কার্যকলাপের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা চাই ঈদের আগেই শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হোক।

শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মাহিদুল মাহিদ/আরআই