ফাইল ছবি 

রাজশাহী বিভাগের সবকটি জেলা ও রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলায় কয়েক দিন ধরে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী ঘাটের ডিপো ইনচার্জ (যমুনা) আবুল ফজল মো. সাদেকিন। বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাত ৮টার দিকে ঢাকা পোস্টকে তিনি এ কথা জানান। 

আবুল ফজল মো. সাদেকিন বলেন, চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত জ্বালানি তেল আমাদের রয়েছে। আজকেও আমরা চাহিদা অনুযায়ী তেল বিতরণ করেছি। তবে যে সংকটের কথা বলা হচ্ছে এটা আসলে ঈদের দীর্ঘ ছুটি থাকার কারণে সাময়িক সংকট। তাছাড়া তেলের কোনো সংকট নেই। 

তিনি বলেন, ব্যাংক বন্ধ থাকায় ডিলাররা ঠিকমতো লেনদেন করতে পারেননি। এছাড়াও বেশিরভাগ স্টাফ ও শ্রমিকরা ছুটিতে ছিলেন। এমনকি তেলবাহী জাহাজগুলো নির্ধারিত সময়ে ঘাটে না আসাও এর একটি কারণ। তবে যে তেলবাহী জাহাজগুলো এখন বাঘাবাড়ী ডিপোর পথে আছে, সেগুলো চলে আসলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। 

আবুল ফজল মো. সাদেকিন বলেন, উত্তবঙ্গের জেলাগুলোতে পেট্রল, অকটেন ও ডিজেল মিলিয়ে প্রতিদিন ৩০ লাখ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। শুধু পেট্রল ও অকটেনের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬-৮ লাখ লিটার। এই চাহিদা পূরণে আমরা সক্ষম। 

এই সংকট পুরোপুরি কাটতে কত সময় লাগবে- জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা আশা করছি আগামী রোববারের মধ্যে সবগুলো জাহাজ ডিপোর ঘাটে এসে পৌঁছে যাবে। ব্যাংকিং কার্যক্রমও শুরু হয়ে যাবে। এতে রোববার থেকেই এই সংকট পুরোটা কেটে যাবে। 

উত্তরবঙ্গ ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহজাহান সিরাজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার জানা মতে ডিপোতে তেল সংকট রয়েছে। এ কারণে আমাদের ট্যাংকলরিও চলছে না। যেহেতু আমরা মালিকের গাড়ি চালাই, তাই তাদের যদি তেল পারাপার বা আনা নেওয়া না থাকে তাহলে তো আমাদের কিছু বলার নেই। 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার ডিস্ট্রিবিউশন এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জ্বালানি তেলের আসলে কোনো সংকট নেই। চাহিদা অনুযায়ী সবাই মোটামুটি তেল পাচ্ছেন। তবে ঈদে মানুষ অতিরিক্ত তেল তোলায় পাম্পের স্বাভাবিকের চেয়ে চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে হয়তো অনেকে মনে করছেন জ্বালানি তেলের সংকট রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, বিভাগের সকল তেল পাম্পের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে, সেখানে কোথাও  তেলের কোনো সংকট নেই। তবে ঈদে বাইরে থেকে প্রচুর গাড়ি ঢুকেছে, যারা প্রচুর পরিমাণে তেল তুলেছেন। পাশাপাশি অনেকেই কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত তেল নিয়েছেন। যার কারণে চাহিদা বেড়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর