কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় জাসদ জাতীয় যুব জোটের নেতা মাহবুব খান সালামকে (৪০) হাত-পায়ের রগ কেটে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় বিচারের দাবিতে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। 

বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার আল্লারদর্গা বাজার এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ সামনে নিয়ে হাজার-হাজার মানুষের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে আমদহ ও আল্লারদর্গা এলাকার সর্বস্তরের জনগণ অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় তারা যুব জোটের নেতা সালাম হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।

এসময় তারা বলেন, আমরা খুনিদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। আল্লারদর্গা গ্রামের বিজলী মোড় ও বয়ান মার্কেটের মাঝামাঝি জায়গায় প্রতিপক্ষের লোকজন সালামকে কুপিয়ে হত্যা করে। অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে এলাকার হাজারও নারী-পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরের দিকে সালামের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্ধ্যার দিকে পারিবারিক গোরস্থানে সালামের লাশ দাফন করা হয়। 

এদিকে এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান এলাকাবাসীর। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। 

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি টোকন চৌধুরীর নেতৃত্বে ২০-২৫ জন হামলা চালায়। তারা সালামকে কুপিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত ১১টার দিকে আল্লারদর্গা বাজার থেকে ভ্যানে করে বাড়ি ফিরছিলেন সালাম। এ সময় আল্লারদর্গা গ্রামের বিজলী মোড় ও বয়ান মার্কেটের মাঝামাঝি জায়গায় রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আলী রাজ নামে এক ব্যক্তি সালামকে ডাক দেয়। এ সময় ভ্যান থেকে নেমে আলী রাজের কাছে গেলে অন্ধকারে ওঁৎ পেতে থাকা সেলিম চৌধুরী ও টোকন চৌধুরীর নেতৃত্বে বাদশা, বকুল, মাছুম, রাজীব, শাহীন, রাজা, রেজুসহ প্রায় ২৫ জন অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সালামের ওপর হামলা চালায়। তারা সালামকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে এবং হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। 

দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবীদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে সালামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এখনো মামলা হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, বুধবার (১১ মে) রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের আল্লারদর্গা গ্রামের বিজলী মোড় ও বয়ান মার্কেটের মাঝামাঝি জায়গায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাহবুব খান সালামকে হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। 

নিহত মাহবুব খান সালাম জাসদের জাতীয় যুব জোটের দৌলতপুর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি উপজেলার আমদহ গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে।

 রাজু আহমেদ/এমএএস