বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টয়লেটের পাইপ ভেঙে নবজাতক উদ্ধারের ঘটনায় দায়মুক্তির প্রতিবদেন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। সোমবার (১৬ মে) সকালে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে তদন্ত কমিটি উপস্থিত হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রতিবেদনে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসেনি। নাড়ি কীভাবে ছিঁড়েছে, সেটিও উঠে আসেনি। তবে নবজাতক ও তার মা পুরোপুরি সুস্থ আছেন। তাদের আজ ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান ও হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান ডা. এম আর তালুকদার মুজিব বলেন, নবজাতকের মা-বাবা কারোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তোলেননি। কিন্তু নবজাতকের নাড়ি কীভাবে ছিঁড়ল, সেই রহস্যেরও সমাধান করা যায়নি। নাড়ি কেটে না দেওয়ার পরও কীভাবে ছিঁড়ল, এর কোনো ব্যাখ্যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে মিলছে না। যে ঘটনা ঘটেছে, চিকিৎসাবিজ্ঞানের কোনো ভাষায় সমাধান করা যায়নি। আসলেই অলৌকিক ঘটনা।

তদন্তে উঠে এসেছে, টয়‌লে‌টের পাইপের মধ্যে ৪৭ মিনিট ছিল নবজাতকটি। মূলত প্যানের সঙ্গে পাইপ সরাস‌রি যুক্ত থাকায় পাইপের ম‌ধ্যে প‌ড়ে যায় নবজাতক। ওই নবজাতক অপরিণত ১ কে‌জি ৩০০ গ্রাম ওজনের হওয়ায় পাইপের মধ্যে কোথাও আটকে যায়নি। নবজাতকের মায়ের মলত্যাগের বেগ অনুভব হলেও টয়লেটে যে তিনি সন্তান প্রসব করে দেন, তা অনুভব করতে পারেননি।

তবে মায়ের সঙ্গে থাকা বৃদ্ধ সন্তান পড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে সবার সহায়তা চান। কিন্তু কীভাবে নাভির নাড়ি ছিঁড়ল, তার উত্তর দেওয়া হয়নি প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে নবজাতকের বাবা নেয়ামত উল্লাহ বলেন, আমার সন্তান বেঁচে আছে, এতেই আমি খুশি। আমাদের সকালে ছাড়পত্র দিয়েছে। এখন আমরা স্বরূপকাঠির পথে। এ ঘটনায় হাসপাতাল একটা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। ঘটনা ঘটেছে তাদের দায় আছে, প্রতিবেদন দিয়ে তারা মুক্ত হয়েছে। কিন্তু আমার সন্তান না পেলে সেই ক্ষতি কখনো পোষাতে পারতাম না।

প্রসঙ্গত, শনিবার (৭ মে) হাসপাতা‌লের প্রসূ‌তি বিভা‌গের টয়‌লে‌টে সন্তান প্রসব করেন পি‌রোজপু‌র জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার গণমান শেখপাড়া বাজারের বাসিন্দা নেয়ামত উল্লাহর স্ত্রী শিল্পী বেগম। নবজাতককে দোতলার টয়লেটের পাইপ কেটে উদ্ধার করা হয়।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ