নড়াইলের লোহাগড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে উপজেলার শামুকখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছেন।

নিহত ভ্যানচালক মিজানুর শরীফ (৫৮) ওই গ্রামের মৃত মজিবর শরীফের ছেলে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়ের শামুকখোলা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আলিম কাজী ও আসকার খন্দকারের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে আজ দুপুর ১২টার দিকে আসকার খন্দকার, হোসেন খন্দকার, জাহিদ খন্দকার, মনির খন্দকার ও শহিদ খন্দকারসহ ৩০-৪০ জন প্রতিপক্ষ ওবায়দুর কাজীর বাড়ি থেকে গরু ধরে নিয়ে যায়। 

পরে গরু ধরে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজন ইট-পাটকেল, লাঠিসোটা, রামদা, ঢাল, সড়কি নিয়ে মাদরাসা এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় আসকার খন্দকারের লোকজন সড়কি দিয়ে মিজানুর শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে।

সংঘর্ষে সৈয়দ আশরাফ আলী, ইমদাদুল কাজী, মফিজুল কাজী ও সোহাগ কাজীসহ ৭ জন আহত হন। আহতদের লোহাগড়া ও নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করে।

উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুন্সী জোসেফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রাম্য সংঘাত মেটানোর জন্য স্থানীয় পর্যায়ে দফায় দফায় চেষ্টা করা হয়েছে। ইতোপূর্বে দুই পক্ষের নেতৃত্ব দানকারী আলিম কাজী ও আসকার খন্দকার সংঘাত করবে না মর্মে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অঙ্গীকার করলেও আজ তারা সংঘাতে জড়ায়। 

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু হেনা মিলন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।

লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ঢাকা পোস্টকে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। 

মোহাম্মদ মিলন/আরআই