কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক সহযোগী অধ্যাপক তার স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৩ মে) রাতে কুষ্টিয়া শহরের পুলিশ লাইন্স স্কুলের পেছনে কমলাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। 

নিহত নূর জাহান পারভিন মিনু (৪০) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মিনাপাড়া গ্রামের মৃত জোবাইর হোসেনের মেয়ে। তিনি এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের মা।

নিহতের স্বামী নজরুল ইসলাম একই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের গনি বিশ্বাস। স্বামী-সন্তানদের সাথে মিনু কুষ্টিয়া শহরের পুলিশ লাইন্স স্কুলের পেছনে কমলাপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। 

নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সঙ্গে প্রায় ১৭ বছর আগে নূর জাহান পারভিন মিনুর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। 

বিয়ের পর থেকেই মিনুকে মারধর করতেন মাদকাসক্ত স্বামী নজরুল। ছেলে-মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করে সংসার করতেন মিনু। সর্বশেষ নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে তার স্বামী। নিহত ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

নিহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন মিলন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার দুপুরের দিক থেকে ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। তাকে ডেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত ৮টার দিকে দরজা ভেঙে দেখি মেঝেতে তার মরদেহ পড়ে আছে। ওই ঘরের দুটি দরজা রয়েছে। নজরুল আমার বোনকে মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য ওই ঘরের ফ্যানের সাথে ওড়না ঝুলিয়ে রাখা হয়। আমার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের দাগ রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, নজরুল একজন মাদকাসক্ত। আমি আমার বোনের হত্যাকারীর নজরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, ফাঁসি চাই।

এ বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, গতকাল আড়াইটার দিকে ঘরে দরজা দিয়ে রাখছিল। এ রকম মাঝে মাঝে দরজা বন্ধ করে রাখেন। পরে রাত ১০টার দিকে দরজা খুলে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যাকারীর পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) খাইরুল আলম ও কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি। 

রাজু আহমেদ/আরআই