প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নে একটি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষককে মারধর ও মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ নারীকে আটক করেছে রুহিয়া থানার পুলিশ। রোববার (২৯ মে) দুপুর ১২টায় ইউনিয়নের বড়দেশ্বরী হাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে। 

এসময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পিয়ন ও একজন অভিভাবক সদস্যকে মারধর করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও দুইজন নারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। 

সরেজমিনে ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির তথ্য সূত্রে জানা যায়, স্কুলের মাঠের পাশে ২৬.২৫ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছে বড়দ্দেশ্বরী গ্রামের মাইনুল। গত ২৬ মে সেই জমিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমানের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। উচ্ছেদের পরে স্কুলের জমি বেড়ার আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট। সকালে শ্রমিকদের নিয়ে বেড়া লাগাতে গেলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পিয়ন, ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। 

স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার জানায়, সকালে প্রধান শিক্ষক সীমানা ঘেরাও দিতে গেলে আমরা দেখতে যাই। সেই সময় কয়েকজন স্যারে ওপর হামলা করে। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদের ওপরও হামলা করে। এখন আমরা খুব ভয়ে আছি। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আতাউর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক ও শ্রমিকসহ আমরা বেড়া নির্মাণ করতে যাই। এসময় মাইনুলসহ আরো কয়েকজন আমাদের ওপর হামলা করে। আমার মোটসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়। প্রধান শিক্ষক ও পিয়নকে মারধর করে। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফা কামাল বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে আমরা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সীমানা ঘেরা দিতে গেলে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এসময় তারা শিক্ষার্থীদের ওপরও হামলা করে। আমাকেও মেরেছে। পরে এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় রুহিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেবাশীস দত্ত সমীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, হামলার ঘটনা শোনার পরেই আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। শিক্ষার্থীরা অনেক ভিত হয়ে পড়েছিল। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ ঘটনায় রুহিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চিত্ত রঞ্জন রায় ঢাকা পোস্টকে  বলেন, মোবাইলে সংবাদ পাওয়ার পরে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন। ঘটনার সঙ্গে জরিত দুই নারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তীতে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এম এ সামাদ/এমএএস