ফরিদপুরে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ডিজিটাল ওয়ারেন্ট অফ অ্যারেস্ট অ্যান্ড সমন এক্সিকিউশন সিস্টেম (ডিডাবলিউএইএস) এর উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ওয়ারেন্ট তালিম ও বিচার একে অপরের সঙ্গে জড়িত। ডিজিটাল মানে স্বচ্ছতা, ডিজিটাল মানে জবাবদিহিতা। আগে কোর্ট থেকে আসামি বা সাক্ষীর নামে সমন জারি হলে তা বিভিন্ন হাত ঘুরে থানায় পৌঁছাতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগত। এ কারণে জেলা পুলিশের উদ্যোগে একটি অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যেখান থেকে সমন জারি হয় সেখান থেকে যদি তালিম করার উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে সমন তালিম করা দ্রুত হবে। ফলে দ্রুত মামলার বিচার পাওয়া যাবে। সেই লক্ষে ফরিদপুর প্রকৌশল কলেজের এক শিক্ষক ও দুই ছাত্রের সহায়তায় অ্যাপসটি তৈরি করা হয়েছে, যাতে দ্রুত সমন তালিম করা যায়।

পুলিশ সুপার বলেন, উন্নয়নের সঙ্গে অপরাধ জড়িত। যেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হবে সেখানে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদে বিনিয়োগ করতে পারে। এজন্য সেই এলাকায় উন্নয়ন বেশি হয়। একটি অপরাধ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ সৃষ্টির জন্যই এ ডিজিটাল সমন তালিমের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ফরিদপুরের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফারুক হোসেন। ফারুক হোসেন বলেন, ক্রিমিন্যাল মামলা শুরু করে পুলিশ এবং শেষ করে পুলিশ। এর মাঝে বিচারকরা ভূমিকা রাখেন। এ জাতীয় মামলার ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা যদি হয় ৪০ ভাগ তবে পুলিশের ভূমিকা সেক্ষেত্রে ৬০ ভাগ।

তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের (বিচারক) ভূমিকা অনেকটা বাবুর্চির মতো। একজন বাবুর্চির কাছে ভালো রসদ তুলে দিলে রান্না ভালো হয় আর খারাপ রসদ তুলে দিলে রান্নার মান খারাপ হয়। সেই রকম আমরা ভালো রসদ পাই না বলেই সহজে জামিন পেয়ে যান অপরাধীরা।

সভায় ফারুক হোসেন পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, আপনারা মামলা সঠিকভাবে উপস্থাপন করলে সাক্ষী ভালো হলে তবেই তো অভিযুক্তদের সাজা দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, মাদক মামলায় সাধারণ মানুষের সাক্ষ্য জরুরি নয়, জরুরি পুলিশের সাক্ষ্য। পুলিশ ঠিকমতো সাক্ষী দিলে অপরাধীর সাজা হবে। 
 
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এদেশে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়। কিন্তু এ জাতীয় মামলায় কারও সাজা হয়েছে বলে আমি দেখিনি। এর একটাই কারণ হতে পারে, পুলিশই পুলিশের মামলার সাক্ষী ঠিকমতো দেয় না। এই যদি হয় বাস্তবতা তাহলে পাবলিক কি করবে?

এ সময় ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জামাল পাশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) এমদাদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. হেলালউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (মধাখালী সার্কেল) সুমন রঞ্জন করসহ জেলার সকল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), কোটপরিদর্শক মো. নূরুল ইসলাম, ট্রাফিক পরিদর্শক তুহিন লস্কর উপস্থিত ছিলেন। 

জহির হোসেন/এমএএস