পড়ালেখা থেকে দূরে রাখতে মাসরুবাকে খাওয়ানো হতো ভুল ওষুধ
এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান মাসরুবা। ইচ্ছে ছিল একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবেন। কিন্তু পরিবার তাকে বসিয়ে দেন বিয়ের পিঁড়িতে। তাতেই তার জীবনের সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ঘুরে বেড়ান এদিক-সেদিক।
শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হয়ে হারিয়ে যান মাসরুবা। রাজশাহী থেকে ভুল করে ট্রেনে করে চলে আসেন বগুড়ায়। এখানে উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা করতে দেখে লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তাজমিলুর রহমান তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। এরপর তিনি মাসরুবার গ্রামের নাম জানার পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মেয়ের খোঁজ পেয়ে পরিবারও ছুটে যায় বগুড়ায়।
বিজ্ঞাপন
মাসরুবার বাড়ি রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার বালিপাড়া গ্রামে। মেয়ের এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা পড়েছেন বিপাকে। কোনো ধরনের চিকিৎসাও করাতে পারেননি অভাবের কারণে।
বগুড়া সদর থানার নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ডেস্কের এসআই জেবুননেছা জানান, তার মা ও ভাই-বোনকে তার এ অবস্থার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা জানান, ২০১২ সালে মাসরুবা এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর গ্রামের মানুষের যুক্তি-বুদ্ধিতে মাসরুবাকে বিয়ে দেন। তার স্বামী কোনো লেখাপড়া জানেন না। বিয়ের এক মাস পর ফল বেরোলে মাসরুবা জিপিএ-৫ পান। এতে মাসরুবা খুশিতে যেন পূর্ণিমার চাঁদ হাতে পেয়েছেন। কিন্তু তার স্বামী ততটাই অসন্তুষ্ট।
বিজ্ঞাপন
মাসরুবার মায়ের বর্ণনামতে পুলিশ আরও জানায়, এসএসসি পাসের পর মাসরুবার শ্বশুরবাড়ির লোক তাকে পড়াশোনা করতে নিষেধ করেন। তিনি যাতে না পড়তে পারেন, সে জন্য বিভিন্ন প্রকার ওষুধ খাওয়ানো হতো। এরপর আস্তে আস্তে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ হতে থাকেন।
বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তাজমিলুর রহমান বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন মাসরুবার গ্রামের নাম জানার পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার ভাই জাহাঙ্গীর ও মা সদর থানায় আসেন। মেয়েকে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মাসরুবার মা। শেষে আইনি প্রক্রিয়ায় মাসরুবাকে তাদের কাছে হস্তান্তর করি।
এনএ