টাঙ্গাইলের বাসাইলে শিশু তিশাকে (৯) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে তিন বন্ধু। তাদের গ্রেপ্তারের পর পিবিআই পুলিশের কাছে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে তারা। এর আগে বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
 
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মন্ডলের ছেলে গোবিন্দ মন্ডল (১৯), একই গ্রামের আনন্দ মন্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল (১৭) ও লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৬)।

নিহত তিশা বাসাইল শহীদ ক্যাডেট একাডেমির দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত ২৬ মে ধর্ষণের শিকার হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৯ মে সাভার এনাম মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।

জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিশাকে সব সময় উত্ত্যক্ত করত গোবিন্দ মন্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল ও বিজয় সরকার। ঘটনাটি তিশা তার মাকে জানায়। তবে উত্ত্যক্তকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের কিছু বলতে সাহস করেননি তিশার মা।

তিনি আরও বলেন, গত ২৬ মে ছেলেকে নিয়ে তিশার মা শহীদ ক্যাডেট একাডেমিতে গেলে ওত পেতে থাকা আসামিরা তিশার ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মায়ের ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে যায়। বাড়িতে এসে তিশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন তার মা।

স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্সটি পথে বিকল হওয়ায় সাভার এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৯ মে তিশার মৃত্যু হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, তিশার মৃত্যুর ঘটনায় ওই দিনই বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলায় হয়। ৪ জুন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। পরে তিশার বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণের মামলা করেন। পিবিআই নিজ উদ্যোগে তদন্তভার গ্রহণ করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল কবির তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের গ্রেপ্তার করে। এরপরই আসাসিরা অপরাধের কথা স্বীকার করে। তাদের আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

তিশার মা সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েকে যারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দাবি করছি। যাতে পরবর্তী সময়ে আর কোনো মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়।

অভিজিৎ ঘোষ/এনএ