পলিথিনের ঘরে ২০ বছর ধরে বসবাস, দেখতে গেলেন ইউএনও
ভাঙা বাড়ির সামনে কফিল উদ্দিন ও তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন
পলিথিন ও বস্তা দিয়ে তৈরি ঘরে ২০ বছর ধরে এক বৃদ্ধ দম্পতির বসবাসের খবর পেয়ে দেখতে গেলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা।
ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের গহড়াগছ এলাকায়। তারা হলেন কফিল উদ্দিন (৭০) ও তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে যান ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্র জানায়, কফিল উদ্দিন ও তার স্ত্রী সুফিয়ার এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ভিটেমাটির জমি বাকি রেখে যা ছিল তা বিক্রি করে দুই মেয়ের বিয়ে দেন কফিল উদ্দিন।
বাড়িতে দিনমজুর ছেলেও বসবাস করেন। পলিথিন ও বস্তা দিয়ে ঘর তৈরি করে ২০ বছর ধরে বসবাস করছেন তারা। একমাত্র ছেলে মানুষের বাড়িতে কাজ করে যা পান তা দিয়ে কোনোরকম সংসার চলে তাদের।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানায়, ঝড়-বৃষ্টির দিনে কফিল উদ্দিন ও সুফিয়া খাতুন মানুষের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কারণ তাদের ঘরে পানি পড়ে। ২০ বছর ধরে পলিথিন ও বস্তা দিয়ে তৈরি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
বৃদ্ধ কফিল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা ঘরে থাকি। আমাদের কেউ সহযোগিতা করেনি। হঠাৎ করে ইউএনও বাড়িতে এসে বললেন সরকারিভাবে ঘর করে দেবেন। আমি ধন্যবাদ জানাই তাকে। তিনি আমার মতো গরিবের বাড়িতে এসে ঘর বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলেন।
সুফিয়া খাতুন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের জমি আছে কিন্তু ঘর নেই। আমার স্বামী কাজকর্ম করতে পারেন না। ছেলের উপার্জনে সংসার চলে। টাকার অভাবে ঘর তুলতে পারি না। ইউএনও বলেছেন পাকা ঘর করে দেবেন। নতুন একটা ঘর পেলে শান্তিতে ঘুমাতে পারব।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, বৃদ্ধ দম্পতিকে ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলেছেন ইউএনও। বিষয়টি বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, বৃদ্ধ কফিল উদ্দিন ও সুফিয়া খাতুনের বিষয়ে জানতাম না। গতকালই জেনেছি। পরে বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে যাই। তাদের বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ তাদের আধা পাকা একটি ঘর তৈরি করে দেব। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ঘর তৈরির নির্দেশ দিয়েছি।
রনি মিয়াজী/এএম