কুয়াকাটা ভ্রমণে এসে সমুদ্রে সাঁতার কাটতে নেমে কথিত নিখোঁজ পর্যটক ফিরোজ শিকদার (২৭) এখন মহিপুর থানা পুলিশের হেফাজতে।

মঙ্গলবার সকালে বেনাপোল বন্দর থেকে মহিপুরে এসে ফিরোজ তার বড় ভাই মাসুম শিকদারকে নিয়ে থানায় হাজির হন। দুপুরে মহিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে ফিরোজের সঙ্গে কথা বলেন।

কীভাবে তিনি কুয়াকাটা সৈকতে সাঁতার কাটতে নেমে চেন্নাই পৌঁছালেন, এমন প্রশ্ন ছিল সাংবাদিকদের। এসময় ফিরোজ শিকদারের কথাবার্তা ছিল রহস্যজনক। 

ফিরোজ জানান, ২৭ মে দুপুরে সমুদ্রে গোসল করতে নেমে ঢেউয়ের তোড়ে প্রায় ২০ মিনিট গভীর সমুদ্রে ভাসতে থাকেন। এরপর একটি কলাগাছের নাগাল পান। ওই কলাগাছ ধরেই স্পিডবোটের গতিতে সমুদ্রের আরও গভীরে যেতে থাকেন। এরমধ্যে রাত হয়ে গেলে এর কোনো এক সময় একটি মাছধরার ট্রলারের জেলেরা তাকে তাদের ট্রলারে তুলে নেয়। তার ভাষ্যমতে ওই ট্রলারটি ছিল ভারতীয়। 

এর একদিন পর ওই ট্রলারের জেলেরা ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তাকে তুলে দেন। ভারতের চেন্নাই শহরে তাদের হেফাজতে থাকার একদিন পর একটি মোবাইল ফোন কিনে দেওয়াসহ বিমানযোগে কোলকাতা পৌঁছানোর যাবতীয় ব্যবস্থা করেন ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা। এরমধ্যে মোবাইল ফোন ক্রয়ের ক্যাশমেমো, বিমান ও ট্রেনের যাত্রী হিসেবে বেনাপোল সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছাতে যেসব কাগজপত্র তার হাতে থাকার কথা এর কিছুই দেখাতে পারেননি ফিরোজ।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা জেলে ফিশিং ট্রলারের মাঝি সমবায় সমিতির সভাপতি নুরু মাঝি ঢাকা পোস্টকে বলেন, লবণাক্ত সমুদ্রের পানিতে ৭/৮ ঘণ্টা কেউ ভাসমান থাকলে চেহারা ও ত্বকের দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটবে। কিন্তু ফিরোজের বেলায় তার কোনো কিছুই স্পষ্ট ছিল না।

পুলিশের ধারণা, রহস্যজনক কারণে ফিরোজ নিখোঁজের গল্প সাজিয়ে থাকতে পারেন। 

মহিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের এ প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফিরোজ কুয়াকাটা সৈকতে এসে এরপরে সাগরে ভেসে গিয়েছেন কি না সেটি স্পষ্ট না হলেও বেনাপোল সীমান্ত থেকে মহিপুরে এসেছেন এটি সত্য। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 


কাজী সাঈদ/এমএএস