ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাসের তরুণী বিবি সোহেলা (২৬) বাংলাদেশি যুবক মুস্তাকিন ফকিরের (২৭) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বিয়ের পর মুস্তাকিনের বিদেশি স্ত্রী সোহেলা প্রথমবারের শ্বশুরবাড়ি এসেছেন। বিদেশি বধূকে নিয়ে এলাকাবাসীর কৌতূহলের যেন শেষ নেই। প্রতিদিন মুস্তাকিনের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা বিদেশি বধূকে দেখতে ভিড় করছেন মুস্তাকিনের বাড়িতে।

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক খবির ফকিরের ছেলে মুস্তাকিন ফকির। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। 

জানা গেছে, তিন বছর আগে জীবিকার তাগিদে মরিশাসে যান মুস্তাকিন। সেখানে কাজের সুবাদে বিবি সোহেলার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেম থেকে প্রণয় ও সর্বশেষ তারা বিবাহবন্ধনে অবদ্ধ হন দেড় বছর আগে।

বিয়ের পর গত ৪ জুন শনিবার শ্বশুরবাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুরে বেড়াতে আসেন সোহেলা। অবশ্য মুস্তাকিন এক মাস আগেই বাড়িতে এসেছেন তিন মাসের ছুটি নিয়ে। ইতোমধ্যে এক মাস পার হয়ে গেছে। স্ত্রী এসেছেন এক মাসের ছুটি নিয়ে। এক মাস বাংলাদেশে থাকার পর মরিশাসে ফিরে যাবেন তিনি। স্বামী মোস্তাকিন যাবেন তারও এক মাস পর।

গত শনিবার (৪ জুন) সকালে মরিশাস থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন বিবি সোহেলা। এ সময় স্বামী মুস্তাকিন, তার বাবা ও পারিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। পরে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রীকে গ্রামের ফরিদপুরে নগরকান্দার রামনগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে নিয়ে আসেন মুস্তাকিন।

বিদেশি বধূ আসার খবরে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুস্তাকিনের বাড়িতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা। তবে বিবি সোহেলা পর্দা মেনে চলেন। পুরুষদের সামনে তিনি আসতে চান না। তবে দর্শনার্থী নারীদের তিনি দেখা দেন, কুশল বিনিময় করেন মুস্তাকিনের মাধ্যমে। 

মুস্তাকিনের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইস শহরের এক মুসলিম পরিবারে জন্ম সোহেলার। সেখানকার একটি ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। বর্তমানে তিনি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। সোহেলার বাবা মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। দুই বোনের মধ্যে তিনি ছোট।

কাজ করার সুবাদে বিবি সোহেলার সঙ্গে পরিচয় হয় বাংলাদেশি যুবক মুস্তাকিনের। ভিনদেশি বধূ ঘরে আসায় খুশির আমেজ বিরাজ করছে মুস্তাকিনের পরিবারের মাঝে।

মুস্তাকিনের বাবা খবির ফকির জানান, তার ছেলে দেড় বছর আগে বিদেশি ওই তরুণীকে বিয়ে করেছেন। তাদের সম্পর্ক ও বিয়ের ব্যাপারে পরিবার আগে থেকেই অবগত।

তিনি বলেন, গত শনিবার (৪ জুন) আমার পুত্রবধূ বাংলাদেশে এলে আমরা পরিবারের সদস্যরা মিলে বিমানবন্দরে গিয়ে তাকে বরণ করে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। 

মুস্তাকিন ফকির বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে বিবি সোহেলার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমি মরিশাসের একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতাম। টানা দুই বছর প্রেমের সম্পর্কের একপর্যায়ে সেখানেই বিয়ে করেছি। আমার স্ত্রী এক মাসের জন্য বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছে। এক মাস পর সে একাই নিজ দেশে ফিরে যাবে।
 
বিদেশি নারীর সঙ্গে সংসার করে কেমন লাগছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যা হয়েছে সব মিলিয়ে আমি সুখী। আমার স্ত্রী বিবি সোহেলা অনেক ভালো মনের মানুষ। একজন স্বামী হিসেবে একজন স্ত্রীর কাছে যতটুকু ভালোবাসা, সহযোগিতা আমি প্রত্যাশা করি তার সবটুকুই সে পূরণ করতে পারে।

জহির হোসেন/আরএআর