ঘুম থেকে উঠছে না শিশুটি
শিশু সিজাদা
রংপুরে সিজাদা নামে ৯ মাসের শিশুর বয়স বাড়িয়ে অসামঞ্জস্য ওষুধ সেবনের চিকিৎসাপত্র দিয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রনজিৎ বসাক। চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পর মাত্রাতিরিক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শিশুটি এখন শয্যাশয়ী। এ ঘটনায় চিকিৎসকের ভুলকে দুষছেন শিশুর পরিবার।
রংপুর নগরের মেডিকেল পূর্ব ফটক-সংলগ্ন ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঘটনাটি ঘটে। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে চিকিৎসক রনজিৎ বসাকের চেম্বার শিশুটিকে দেখানো হয়।
বিজ্ঞাপন
পরিবারের দাবি, সিজাদার বয়স ৯ মাস। কয়েক দিন ধরে সে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছিল। ঠিক মতো পায়খানা না হওয়াতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তার মা-বাবা। সেখান থেকে ফিরে সিজাদাকে ওষুধ খাওয়ান। এরপর আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে সিজাদা।
এ অবস্থায় চিকিৎসাপত্র খুললে চোখে পড়ে সিজাদার বয়স ভুল লেখা। ৯ মাসের শিশুর বয়স বাড়িয়ে লেখা হয়েছে ২ বছর ৯ মাস। এমন ভুল আর অসামঞ্জস্য ওষুধের প্রভাবে ফুটফুটে শিশু সিজাদা এখন শয্যাশয়ী হয়ে পড়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় জন্য চিকিৎসকের খাম-খেয়ালিপনা ও বেশি রোগী দেখার প্রবণতাকে দুষছেন শিশুটির পরিবার। সিজাদার মা জাহেদা আকতার টুম্পা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছরের ১৩ মে ডক্টরস ক্লিনিকে জন্ম হয়েছে সিজাদার। বর্তমান তার বয়স ৯ মাস চলছে। শারীরিক ওজন ৭ কেজি ৪০০ গ্রাম। এমন শিশুকে চিকিৎসক কীভাবে ৩ বছরের শিশু মনে করে ওষুধ দিলেন? রাত থেকে আমার সিজাদার মুখে হাসি নেই। শুধু ঘুমাচ্ছে আর মাঝে মাঝে কান্না করে জেগে উঠছে।
সিজাদার নানি ফাতেমা আকতার ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, কয়েক দিন ধরে সিজাদার ঠিক মতো পায়খানা হচ্ছিল না। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডা. রনজিৎ বসাকের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তড়িঘড়ি করে ওই চিকিৎসক সিজাদাকে দেখে ওষুধ লিখে দেন। তার পরামর্শ ও চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পর থেকে শিশুটি এখন অসুস্থ।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ওই চিকিৎসকের চেম্বারে সিজাদার পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানাতে গিয়ে তাকে না পেয়ে ফিরে আসেন। এরপর থেকে ডা. রনজিৎ বসাকের মুঠোফোনে একাধিবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি বলেও অভিযোগ করেন সিজাদার মা-বাবা।
সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক চিকিৎসক আহসান হাবীবের কাছে শিশুটিকে নেওয়া হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে না ঘাবড়ানোর পরামর্শ দিয়ে নতুন করে ওষুধ দেন।
এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক চিকিৎসক আহসান হাবীব ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশু সিজাদা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে। এ কারণে ঠিক মতো পায়খানা হচ্ছে না। তবে নতুন করে ওষুধ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সেরে উঠবে।
এদিকে বয়স বাড়িয়ে ভুল চিকিৎসাপত্র লেখার বিষয়টি জানতে চিকিৎসক রনজিৎ বসাকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হটলাইনে ফোন করা হলে ঘটনাটিকে ‘বড় কোনো সমস্যা নয়’ বলে কলটি কেটে দেয়।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর