চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় রেললাইন মেরামতের সময় শ্রমিকদের সিগন্যাল অমান্য করে মালবাহী ট্রেন না থামানোয় সহকারী চালক (লোকো মাস্টার) জুনায়েদুর রহমানকে মারধরের ঘটনায় রেলওয়ের পাঁচ কর্মীকে (ওয়েম্যান) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী এম এম রাজিব বিল্লাহকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পাঁচজন হলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েম্যান, হাফিজ, শহিদুল ইসলাম, মুস্তাফিজ, ছাব্বির ও হুমায়ন। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কোন স্থানে মেরামতের কাজ হলে যে স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে আসবে সেই স্টেশন মাস্টার ট্রেন চালককে মেরামতে বিষয়টি জানানোর নির্দেশনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মালবাহী ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্টেশন থেকে ছেড়ে এসেছে, ওই স্টেশন মাস্টার নাজমা পারভীন চালককে মেরামতের বিষয়টি অবগত করেননি। এ কারণে শ্রমিকদের সিগন্যালে চালক গুরুত্ব দেননি বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। সত্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মালবাহী ট্রেনের সহকারী চালককে মারধরের ঘটনায় পাঁচ ওয়েম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে দর্শনা স্টেশন মাস্টার অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকাল থেকে আলমডাঙ্গা লাল ব্রিজের উপর প্রায় ৪০০ মিটার দূরে লাঠির সাহায্যে লাল পতাকা তুলে রাখেন রেল শ্রমিকেরা। বিকেল ৩টার দিকে দর্শনা স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা সিরাজগঞ্জগামী পাথর বোঝাই একটি মালবাহী ট্রেন লাল ব্রিজের কাছে পৌঁছালে লাল পতাকা তুলে ট্রেনটিকে থামানোর চেষ্টা করেন শ্রমিকরা। রেল শ্রমিকেরা ব্যর্থ হলে ট্রেনটি লাল ব্রিজের কাছে থাকা আরেকটি ফ্ল্যাগ ভেঙে ব্রিজে প্রবেশ করে। এ সময় প্রাণ রক্ষায় ব্রিজ থেকে শ্রমিকরা লাফ দেন। কেউ কেউ ব্রিজের রড ধরে ঝুলে পড়েন। শ্রমিকদের চিৎকারে ও সামনে রেললাইন সংস্কারের ট্রলি দেখে থেমে যায় ট্রেনটি।

এ সময় উত্তেজিত হয়ে ট্রেনের প্রধান চালক আমিনুল ইসলাম ও সহকারী চালক জোনায়েদকে মারধর করেন উত্তেজিত শ্রমিকরা। মারধরের প্রতিবাদে লাইনের উপর বন্ধ করে রাখা হয় ট্রেনটি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শক করেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের একটি টিম। পরে ট্রেন চালক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়। রাত ৯টার দিকে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে মালবাহী ট্রেনটি আলমডাঙ্গা ছেড়ে যায়। 

আফজালুল হক/এসকেডি