কুষ্টিয়া শহরের কাটাইখানা মোড় এলাকায় মার্কেট ভবনের ছাদ থেকে পড়ে তমাল (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৩ জুন) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। তবে তার পরিবার বলছে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। 

নিহত তমাল চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা মাসুদ রানা তুহিনের ছেলে। সে আলমডাঙ্গা পাইলট হাইস্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। দুই ভাইবোনের মধ্যে তমাল বড়। তার একটি ছোট বোন রয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে শহরের সমবায় মার্কেট ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে তমাল। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

স্থানীয়রা বলেন, হঠাৎ করে একটা শব্দ হয়। পরে আমরা দেখতে পাই সমবায় মার্কেটের নিচে একটি ছেলে ছাদ থেকে পড়েছে। আমরা সেখানে গিয়ে দেখি তার চোখে একটি মাস্ক বাঁধা। তার নাকে রক্ত ছিল। অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ছেলেটি হয়তো আত্মহত্যা করেছে।

নিহতের বাবা তুহিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল বিকেলে আলমডাঙ্গা থেকে আমার স্ত্রী ও মেয়েকে সঙ্গে করে বোনের বাড়ি এসেছি। আর আমার ছেলে আলমডাঙ্গায় বাড়িতে ছিল। আজ সকালে পারিবারিক কাজে বোনের পরিবার ও আমরা মেহেরপুর যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে আমরা গাংনী এলাকায় পৌঁছালে আমার মোবাইলে কল দেয় একজন পুলিশ। তারপর এসে দেখি মর্গে আমার ছেলের মরদেহ। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে না। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কে বা কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমার ছেলে খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ। আমাদের কাউকে না জানিয়ে সে কুষ্টিয়ায় কেন আসবে?  আত্মহত্যাই বা কেন করবে? আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাটাইখানা মোড় এলাকায় সমবায় মার্কেটের ছাদ থেকে পড়ে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সে আত্মহত্যা করেছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেইনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। 

রাজু আহমেদ/আরএআর