আষাঢ়ের প্রথম দিনেই আবার জলমগ্ন সিলেট
টানা বর্ষণ ও উজানি ঢলে আষাঢ়ের প্রথম দিনেই জলমগ্ন রূপ ধারণ করেছে সিলেটের বেশ কয়েকটি উপজেলা। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে জনসাধারণকে। এক মাসের মধ্যে আবারও বন্যার পূর্বাভাসে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিভিন্ন এলাকার মানুষের মধ্যে।
গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট। হঠাৎ সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বাড়ায় সিলেটের নিম্নাঞ্চলসহ বেশ কিছু জায়গায় ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। বাসাবাড়ি তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে।
বিজ্ঞাপন
সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা কোম্পানিগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, ফেঞ্চুগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় হঠাৎ বাড়ছে পানি।
সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সাংবাদিক আবিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, হঠাৎ পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষকে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাসাবাড়ি ও গবাদিপশু নিয়ে মানুষ বিপাকে পড়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এভাবে যদি পানি বাড়তে থাকে, মানুষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
সিলেটের আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় পানি বেড়েছে। শুধু আজ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫৫.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা চিন্তার বিষয়। ১৯ জুন পর্যন্ত এই টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, জুন মাসে যেখানে ৮১৮.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা, সেখানে ১৫ দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৪২.৮ মিলিমিটার। উজানী ঢলের কারণে হঠাৎ বেড়েছে সিলেটের নদ-নদী ও হাওরের পানি। ফলে প্লাবিত হচ্ছে সিলেটের নিম্নাঞ্চল ও নতুন নতুন এলাকা।
সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সিলেটের নদ-নদীর পানি আবারও বাড়ছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১ মিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এটি দুশ্চিন্তার কারণ।
তিনি আরও জানান, ভারতের মেঘালয় রাজ্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেই পানি উজান বেয়ে বাংলাদেশে আসছে। যদি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বৃষ্টি না কমে, এই পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী তিন-চার দিন পর পানি কমা শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মাসুদ আহমদ রনি/এনএ