জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশের মালিক জনগণ। দেশের মালিক সমালোচনা করতে পারবে, দেশের মালিক কথা বলতে পারবে। এই মালিকদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য যারা রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধায়ক হবেন তাদেরকে আলোচনা-সমালোচনা সব কিছুই শুনতে হবে। এটাই হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের মালিকানা ছিনতাই হওয়ার পথে।

শুক্রবার (১৭ জুন) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সমরক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের এসব কথা বলেন।
 
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সামনে নির্বাচন ঘিরে যে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে যারা ক্ষমতায় আছে তাদের মনোভাব যেকোনো ভাবেই হোক ক্ষমতায় আসতে হবে। ক্ষমতার জন্য সরকার অর্থ ও পেশি শক্তি দিয়ে দলীয়করণ করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে। আর যারা বিপক্ষ দল তারাও বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে ক্ষমতায় আসতে। তারা জানে যে পরাজিত হবে তাকে রাজনীতি থেকে চির বিদায় নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও নির্যাতন থেকে মুক্তি চায়। ব্রিটিশরা এ দেশের কিছু মানুষদের দ্বারাই শোষণ করেছিল, পাকিস্তানিরাও আমাদের শোষণ করেছে। বৈষম্য তখনো ছিল এখনো আছে। সেখানে ধনীরা ধনী হতো, আর গরীবরা আরও গরীব। আজ আমরাও নিজ দেশে এই বৈষম্য সৃষ্টি করেছি। নিজ দলের লোক হলে সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা পাবে নয়তো পাবে না। এটা একা আওয়ামী লীগ বা বিএনপি করেনি। দু’দলই করেছে। সাধারণ মানুষ এখনো অত্যাচারিত ও নিপীড়িত। দু’দলই দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। তাদের আদর্শ ভিন্ন হলেও তারা চরিত্রগতভাবে একই। জনগণ পরিবর্তন চায়, তবে ভোটর মাধ্যমে পরিবর্তন করার ক্ষমতা এই দেশের মানুষ হারিয়ে ফেলেছে। সরকার নির্বাচনের নামে প্রহসন করছে।

জিএম কাদের দেশের টাকা পাচার প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের ৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। গত বছরের থেকে এই বছর প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বেশি পাচার হয়েছে। এই ক্ষমতাসীন সরকারের সহযোগিতায় কিছু লোক দেশের শত শত না হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। পাচার করা টাকা গোপনে সুইস ব্যাংকে রাখা হয়েছে। জাতীয় সংসদে আইন পাস করে সেই টাকা দেশে ফিরিয়ে এনে নামমাত্র ট্যাক্স দিয়ে ভাগাভাগি করে নেওয়ার পায়তারা চলছে। এর ফলে লুটপাটকারীদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সানাউল্লাহ্ সানুর সভাপতিত্বে ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আফজাল হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। 

উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির ঢাকা বিভাগীয় মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি লিয়াকত হোসেন খোকা, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, অ্যাড. শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মশিউর রহমান রাঙ্গা, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, হিদুর রহমান টেপা, ফখরুল ইমাম, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, নাজমা আক্তার, অ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মেজর (অব.) রানা মো. সোহেল, জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা চেয়ারম্যান শেরিফা কাদের, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। 

সম্মেলন শেষে জেলা ও মহানগরের নব-নির্বাচিত কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা সভাপতি সানাউল্লাহ সানু ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম বিপ্লব ও মহানগরের সভাপতি মোদাছিরুল হক দুলাল ও সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন।

ওএফ