সংবাদ প্রকাশের পর ঘর পাচ্ছেন আছিয়া
অসহায় বৃদ্ধা আছিয়া
শেরপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কলকল বাজারের বাসিন্দা অসহায় বৃদ্ধা আছিয়া (৭০) অবশেষে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছেন। তার অসহায়ত্বের কথা জানতে পেরে শেরপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘর প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেছে।
আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী অসহায় আছিয়ার কাছে ঘরটি হস্তান্তর করবেন বলে জানিয়েছেন সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন।
বিজ্ঞাপন
গত ৫ ফেব্রুয়ারি অসহায় বৃদ্ধা আছিয়াকে নিয়ে ‘কোনো দিন একটা কেক খাইয়া দিন পার করি’ শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাপোস্ট.কমে ভিডিওসহ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদটি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ জেলার সমাজকর্মীদের নজরে আসে। তারা বৃদ্ধা আছিয়ার পাশে দাঁড়ান।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃদ্ধা আছিয়াকে নিয়ে প্রকাশিত ভিডিওসহ প্রতিবেদনটি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপর আমরা গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপনে আছিয়া সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করি। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী আছিয়া নেহায়েত গরিব-অসহায়। তাই আমরা জেলা পুলিশের পক্ষ হতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তার জন্য একটা নতুন ঘরের ব্যবস্থা করে দিব। এরই ধারাবাহিকতায় শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরীর দিক নির্দেশনায় আমরা নতুন ঘর তৈরির কাজ শুরু করি। এ পর্যন্ত ঘরটির ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন আছিয়াকে ঘরটি তুলে দিব।
বিজ্ঞাপন
এদিকে আছিয়ার অসহায়ত্বের খবর পেয়ে স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও সমাজকর্মী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া গত ৭ ফ্রেব্রুয়ারি তার বাড়ি গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি আছিয়ার দুঃখ দুর্দশার কথা শুনে তাকে একটি উন্নত মানের কম্বল, চাল, ডাল, সয়াবিন তেল, ডিমসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দেন। পাশাপাশি তাকে হাঁস, মুরগি ও ছাগল কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
আছিয়ার প্রতিবেশী লোকমান মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আছিয়ার জীবন খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। কোনো দিন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতেন তিনি। তার ছেলে, মেয়ে, স্বামী কেউ নেই। ঘর পেয়ে তার অনেক উপকার হয়েছে। এজন্য আমরা পুলিশ ভাইদের ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় বস্তি উন্নয়ন নেত্রী কমলার সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃদ্ধা আছিয়া বর্ষায় অনেক কষ্ট করতেন। সারারাত তার চালের ফুটো বেয়ে পানি পড়তো। মধ্যরাতে ঘুম থেকে উঠে আছিয়াকে পানি সেচতে হতো। যা তার জন্য ছিল অনেক কষ্টকর। দেরিতে হলেও তার জন্য একটা ঘরের ব্যবস্থা হলো। এজন্য শেরপুরের পুলিশ ভাইদের আমরা ধন্যবাদ জানাই।
জাহিদুল সৌরভ/আরএআর