সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (নৌকা প্রতীকের) আবুল বাসার খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে কেন তাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে না সেই বিষয়ে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে গত ১৬ জুন ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। এ আদেশের চিঠির বিষয়টি মঙ্গলবার (২১ জুন) সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পরে পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানকে সোমবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে কেন তাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে না সেই বিষয়ে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্তের আদেশের কপিতে উল্লেখ করা হয়, গত তিন বছর ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের ১২ লাখ ৮২ হাজার ৩৫০ টাকা মাসিক সভায় আলোচনা বা রেজুলেশন না করে আত্মসাৎ করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান। তার বিরুদ্ধে করোনাকালে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের চাল আত্মসাৎ এবং প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের বরাদ্দ অসহায় মানুষের জন্য ২৫০০ টাকার অর্থ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। 

তিনি এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে তথ্য সেবাকেন্দ্রের মালামাল না কিনে অর্থ আত্মসাৎ, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ফটোকপি মেশিন কেনা বাবদ ৯০ হাজার টাকা, ইউনিয়ন ভিত্তিক করোনা টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্মীদের আপ্যায়নের ৩৫ হাজার টাকা, ট্রেড লাইসেন্স ফি, ওয়ারিশ ফি, ওয়ারিশ সনদ ফি, অটোরিকশা লাইসেন্স ফি এর তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। একইসঙ্গে প্রাক্তন ইউপি সচিব দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া ২০ সেট রিং স্লাব ইউপি সদস্যদের না জানিয়ে বিতরণের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়। 

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে পুরনো সেতুর লোহার মালামাল বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন। এরই প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান বলেন, আমাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সময় মতো আমি এর জবাব দেব। আমি কখনো কোনো দুর্নীতি করিনি।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমএএস