সোনারগাঁ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সমর আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত ও নারীসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। সংঘর্ষের পর থেকে গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোনারগাঁ থানা ও নারায়ণগঞ্জের রিজার্ভ পুলিশ মোতায়েন করা হলে গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্র ও গ্রামবাসী জানান, আধিপত্য বিস্তার ও বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে নয়াগাঁও গ্রামের আলাউদ্দিনের সঙ্গে একই এলাকার ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমানের দ্বন্দ্ব চলছিল।

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে কামাল, গোলজার, বাদল ও আরিফসহ ২০-২৫ জন অস্ত্র, বল্লম, চাপাতি ও লোহার রড নিয়ে সাদেকুর রহমানের দোকানে হামলা চালান। সেই সঙ্গে সাদেকুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান, রেখা, তাসলিমা, সায়বা, জাবেদ ও জিসানসহ ১০ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। পাশাপাশি সাদেকুর রহমানের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাদেকুর রহমানের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আলাউদ্দিনের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালান। তখন উভয়পক্ষের সংঘর্ঘ বাধে। দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আলাউদ্দিনের পক্ষের সমর আলী, জাহিদুল ইসলাম, মাহিলউদ্দিন, মোশাররফ, নুরনবী, নিলা, দেলোয়ার হোসেন ও আব্দুল আলীসহ আটজন আহত হন। আহত সমর আলীকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

অপরদিকে সাদেকের পক্ষের খোরশেদ আলম, সাইদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, বিপ্লব, সুমন, শাকিল, মাহফুজ ও ছোট সুমনসহ ১২ জন আহত হন।  

গ্রামবাসী আরও জানান, আলাউদ্দিনের ও সাদেকের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। শুক্রবার ও শনিবারের সংঘর্ষে একজন নিহতসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। কয়েকদিন পর পর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত কোরবানি ঈদের আগের দিনও সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই সময় নারীসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। আলাউদ্দিনের ছেলে পুলিশ সদস্য হওয়ায় প্রভাব বিস্তার করে এলাকার লোকজনকে জিম্মি করে রেখেছেন।

সাদেকুর রহমানের স্ত্রী শেফালী বেগম বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে শুক্রবার রাতে আমার স্বামীর দোকানে ৩০-৩৫ জন লোক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আলাউদ্দিনের নির্দেশে স্বামীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। শনিবার আবার হামলা চালালে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ পর্যন্ত আমাদের ২০-২২ জনকে কুপিয়ে আহত করেছেন আলাউদ্দিনের লোকজন। 

তবে বিষয়টি অস্বীকার করে আলাউদ্দিন বলেন, তারা উচ্ছৃঙ্খল লোক। আমার আত্মীয় সমর আলীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তারা। এর আগে ভাতিজাকে হত্যা করেছিল। শুক্রবার রাতে আমি বাড়ি ফেরার পথে হামলা চালায়। শনিবার আমার লোকজনের বাড়িঘর ও দোকান ভাঙচুর করে তারা।

সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তবিদুর রহমান বলেন, দফায় দফায় সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দুজনকে আটক করা হয়েছে।

শেখ ফরিদ/এএম