প্রেমিক-প্রেমিকার রোমান্স ও থ্রিলারের মিশেলে নির্মিত সিনেমা ‘তালাশ’। মুক্তির আগে ছবির পরিচালক সৈকত নাসির গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, এই ছবিতে নতুন আঙ্গিকে গল্প বলা হয়েছে। যা আগে কখনো করেননি তিনি। দর্শকের কাছে গল্প বলার নয়া এই ধরণটি বেশ আকর্ষণীয় হবে বলেও প্রত্যাশা ছিল এই নির্মাতার। 

বুবলীর সঙ্গে জুটি বেঁধে এই ছবি দিয়েই বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছে আদর আজাদের। তার মাঝেই দর্শকের বাড়তি আগ্রহ দেখে শুধু সিনেমা সংশ্লিষ্টরাই নয়, হল মালিকেরাও ‘তালাশে’ লাভের আশায় বুক বেঁধেছিলেন। 

এরপর গত ১৭ জুন সারাদেশে অর্ধশত সিনেমা হলে বেশ ঘটা করে মুক্তি দেওয়া হয় আদর-বুবলীর ‘তালাশ’। অন্যান্য স্থানের মতো ময়মনসিংহ নগরীর ছায়াবানী ও মুক্তাগাছা উপজেলার রুমা সিনেমা হলে শুরু হয় এর প্রদর্শনী। 

ট্রেলার প্রকাশের পর সিনেমাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যতটা না আলোচিত হয়েছিল, বাস্তবে পুরো উল্টো চিত্র। একেবারেই দর্শক টানতে পারেনি এই সিনেমা। যে কারণে তালাশেও লোকসানের মুখে পড়ে হতাশ হল কর্তৃপক্ষ।

সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিকেলে নগরীর ছায়াবানী সিনেমা হলে গিয়ে কথা হয় হলটির ম্যানেজার শহর উদ্দিন হাসান শাকিলের সঙ্গে। তিনি জানান, ইচ্ছা ছিল সিনেমাটি দুই সপ্তাহ চালাবো। কিন্তু একেবারেই দর্শক নেই। প্রতি শোতে দর্শক একজন, দুইজন বা পাঁচজন করে ছিল। সপ্তাহে কোনো শোর দর্শক সংখ্যা ১০ জন ছাড়ায়নি। আর কোনো দর্শক না থাকায় ৫টি শো বন্ধ রাখতে হয়েছে। তাহলে বোঝেন কী অবস্থা। সেজন্য শুক্রবার (২৪ জুন) থেকে পুরোনো ছবি দিয়েই হল চালাতে হচ্ছে। 

তার কথা সূত্র ধরে বিকেল সাড়ে ৩টার শো চলার সময় হলের ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, মাত্র একজন দর্শক বসে দেখছেন সিনেমা। ফাঁকা রয়েছে সাতশোরও বেশি আসন। এভাবেই দর্শক ছাড়াই কেটেছে তালাশের সপ্তাহ। 

ম্যানেজার শহর উদ্দিন বলেন, এক সপ্তাহে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ। কিন্তু হলে দর্শক না থাকায় যার পুরোটাই লোকসান গুনতে হলো। আগে এক শোতে যে পরিমাণ টিকিট বিক্রি হতো, এখন এক সপ্তাহে অর্ধেকও হয় না। এর কারণ হিসেবে মানসম্মত গল্প ও ভালো অভিনেতার সংকট দায়ী। 

ছায়াবানীর থেকেও খারাপ অবস্থা মুক্তাগাছা উপজেলার রুমা সিনেমা হলের। এখানে প্রথম দুই দিন সিনেমাটি প্রদর্শিত হলেও দর্শকের তেমন সাড়া মেলেনি। ফলে হলটির মালিক শফিকুল ইসলাম সরকার এতটাই হতাশ যে, ক্ষোভে দুই দিন পরই এই ছবি নামিয়ে দিয়ে পুরোনো ছবি দিয়েই চালাচ্ছেন হল। 

তিনি বলেন, সিনেমাটি নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল তার ছিটেফোঁটাও পূরণ করতে পারেনি। তিন-চারজনের বেশি দর্শক আসেনি শোতে। এমনটা হতে থাকলে এ ব্যবসা আর সম্ভব না। এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে ঈদের পর হল বন্ধ করে দিয়ে অন্য ব্যবসা করব ভাবছি। 

উবায়দুল হক/আরএআর