ভালোবাসার মিনার
কেউ বাকপ্রতিবন্ধী, কেউবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, কেউ আবার চলাচলে অক্ষম। কিন্তু তাদের মনে আছে অদম্য ইচ্ছা আর ভালোবাসা। সেই ইচ্ছা থেকেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মহান ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে নিজেরাই তৈরি করেছে শহীদ মিনার। বাঁশ দিয়ে কৃত্রিমভাবে বানানো এ প্রতীকী শহীদ মিনারের নাম দিয়েছেন তারা ‘ভালোবাসার মিনার’।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ নগরীর খাগড়হর এলাকায় মরহুম অ্যাডভোকেট আজিজুল হক ইনক্লুসিভ স্পোর্টস অ্যান্ড এডুকেশন একাডেমি প্রাঙ্গণে নিজেদের তৈরি এ মিনারের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কোমলমতি এসব শিশু, যাদের প্রত্যেকের বয়স ৫ থেকে ১৭ বছর।
বিজ্ঞাপন
এ সময় পাশে সাউন্ড বক্স থেকে ভেসে আসা কালজয়ী সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...’-এর সঙ্গে কণ্ঠ মেলায় সবাই।
নাজমা আক্তার রানি, সুমাইয়া, নাজনীনসহ কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। তারা ঢাকা পোস্টকে বলে, আমরা যে ভাষায় কথা বলতে পারছি, তা সম্ভব হয়েছে ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের কারণে। তাই আমরা নিজেরাই শহীদ মিনার তৈরি করে ও বেদিতে ফুল দিয়ে সেই সময়ের শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়েছি। এভাবে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আমাদের খুব ভালো লাগছে।
বিজ্ঞাপন
মরহুম অ্যাডভোকেট আজিজুল হক ইনক্লুসিভ স্পোর্টস অ্যান্ড এডুকেশন একাডেমির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রাবণী আক্তার শান্তা ঢাকা পোস্টকে জানান, অস্থায়ী এই শহীদ মিনার বানানোর জন্য প্রথমে বাঁশ কেটে আনা হয়। তারপর মাটিতে গর্ত করে তা পোঁতা হয়। নিচের দিকটায় বেদির মতো তৈরি করা হয়েছে। এ কাজ করতে শিশুদের সময় লেগেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
একাডেমির সভাপতি সাজেদুল হক হিমেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাদের প্রচণ্ড আগ্রহ খেকেই এমনটি করেছে তারা। আমাদের এখান থেকে শহীদ মিনারটি একটু দূরে হওয়ায় যাতায়াতে অসুবিধার কথা চিন্তা করে শিশুরাই এখানে অস্থায়ী শহীদ মিনারটি করেছে। এটি ভাষাশহীদদের প্রতি তাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, তাদের দেশপ্রেম ও চেতনাবোধ আমাদেরও উজ্জীবিত করেছে। ভবিষ্যতে একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
উবায়দুল হক/এনএ