গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক বুরহানের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন /ছবি ঢাকা পোস্ট

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খুনের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় লাশ নিয়ে যেন কেউ রাজনীতি করতে না পারে তার হুশিয়ারি দেন তারা।

বক্তারা আরও বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলছে। এতে করে সাংবাদিকদের কর্মক্ষেত্র ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আগেও অনেক সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় এ ধরনের সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বখতিয়ার শিকদার, ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলমগীর ইউসুফ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি ও যায়যায়দিনের স্টাফ রিপোর্টার আবু নাসের মঞ্জু, দেশ রুপান্তরের জেলা প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক জামাল হোসেন বিশাদ, এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের জেলা প্রতিনিধি ফুয়াদ হোসেন, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বঙ্গবন্ধু চত্বরে কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ফকিরা বাজারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় আহতদের মধ্যে ২০ জনকে বসুরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সমর্থকদের নিয়ে চাপরাশিরহাটে মিছিল করেন। পরে চরফকিরা বাজারে সমাবেশ করছিলেন তিনি।

এ সময় পৌর মেয়র কাদের মির্জা সমর্থিত চরফকিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটনের নেতৃত্বে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সমাবেশস্থলে পৌঁছালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সেই সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বার্তা বাজারের প্রতিনিধি বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। পরে লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পরে গুলিবিদ্ধ সংবাদকর্মী বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরকে প্রথম নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

হাসিব আল আমিন/এমএসআর