মা ভাই বোনকে হত্যার দায় স্বীকার করলেন আহবাব
গ্রেপ্তার আহবাব
সিলেটে মা ও ভাই-বোনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আহবাব হোসেন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন খানম নীলার আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। শাহপরাণ থানা পুলিশের ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট শহরতলীর খাদিমপাড়া ইউনিয়নের বহর এলাকার মীর মহল্লা গ্রামের ৯নং বাসায় আবদাল হোসেন খানের ২য় স্ত্রী রুবিয়া বেগম চৌধুরী, মেয়ে জান্নাতুল হোসেন মাহি ও তাহসান হোসেন খানকে কুপিয়ে হত্যা করে তার সৎ ছেলে আহবাব হোসেন। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই আহবাবকে আটক করে। আহবাব হোসেন আবদাল হোসেনের প্রথম স্ত্রীর সন্তান।
বিজ্ঞাপন
পরদিন শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় নিহত রুবিয়া বেগমের ভাই আনোয়ার হোসেন এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিয়ানীবাজার থানার আষ্টঘরী গ্রামের আবদাল হোসেনের প্রথম স্ত্রীর সন্তান আহবাব হোসেন ও তার প্রথম স্ত্রী সুলতানা বেগম রুমিকে (আহবাবের মা) আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন সময় আমার বোন ফোন করে জানায় সৎ ছেলে আহবাব তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতো। তার এ কাজে সতিন সুলতানা বেগম রুমি প্ররোচনা দিতেন। চার মাস আগে আহবাব তার বাবাকে দোকানের কাজে সহযোগিতার জন্য সিলেটে আসে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সে বাসায় ফিরে। রাত ১২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার বোন রুবিয়া বেগম, তার মেয়ে মেয়ে জান্নাতুল হোসেন মাহি ও তাহসান হোসেন খানকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে আসেন। এরই মধ্যে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে বিছানায় আগুন ধরিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে হাসাপতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর আমার বোন ও ভাগ্নি মাহিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাগ্নে তাহসানেরও মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শাহপরান থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, সৎ মা ও ভাই-বোনকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে আহবাব। ঘটনাস্থল থেকে ঘাতককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তবে এ মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা শুক্রবার রাতেই মামলা করেছি। এজাহার দাখিলের সময় আসামি আহবাবকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় সেই বিষয়টি উল্লেখ করতে দেয়া হয়নি।
এদিকে শনিবার দুপুরে সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আহবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
তুহিন আহমদ/এমএএস