রংপুরে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আবুল বাশারত নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে বাবা ও ছেলের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক তারিখ হোসেন এ রায় দেন। 

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নুর আমিন ও তার ছেলে মাহবুর ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশি পাহারায় তাদেরকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে প্রিজনভ্যানে তাদের রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার জিগাবাড়ি গ্রামের আবুল বাশারতের মেয়েকে পাশের গ্রাম বিশ্বনাথপুরের মাহবুর ইসলাম নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। আবুল বাশারত বিষয়টি জানতে পেরে বেশ কয়েকবার উত্ত্যক্তকারী মাহবুর ইসলামকে নিষেধ করেন এবং তার বাবা নুর আমিনের কাছে বিচার দেন। কিন্তু নুর আমিন তার ছেলেকে শাসন না করে উল্টো তাকে নানাভাবে হুমকি দেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে কয়েক দফা ঝগড়াও হয়।

ওই ঘটনার জের ধরে ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর আসামি মাহবুর ইসলাম ও তার বাবা নুর আমিন তাদের সামনে আবুল বাশারতকে একা পেয়ে অন্যদের সহায়তায় তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে এলাকাবাসী আবুল বাশারতকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার দিন রাতেই তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত আবুল বাশারতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে নুর আমিন ও তার ছেলে মাহবুর ইসলামকসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে চার আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ওই মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার যুক্তিখণ্ডন শেষে আসামি নুর আমিন ও তার ছেলে মাহবুর ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন। ওই মামলা থেকে মাইদুল ও মাহফুজার রহমান নামে দুইজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি জানান, এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই রায় দ্রুত কার্যকর করতে হবে। 

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রশীদ চৌধুরী জানান, তারা ন্যায্য বিচার পাননি। রায়ের কপি হাতে পেলে এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর