বিএনপি নেতার বৈঠকে যুবলীগের হামলা, নাশকতা মামলায় কারাগারে ১২
‘সরকার বিরোধী’ পরিকল্পনায় বৈঠকের অভিযোগে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বাসায় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে মারধর করে ১২ জনকে পুলিশে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও বিএনপি নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন, পিতার মৃত্যুবার্ষিকীর আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে বৈঠকে বসেছিলেন তারা। আর এতেই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
তবে পুলিশ বলছে, সরকার বিরোধী নাশকতার পরিকল্পনাকালে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নে সোমবার রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন।
তিনি জানান, সরকার বিরোধী নাশকতার পরিকল্পনাকালে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এসআই আব্দুল হক বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন মিয়া জানিয়েছেন, বিগত নির্বাচনে বার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছেন। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওদের পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজনের প্রস্তুতির জন্য কয়েকজনে বসেছিলেন। তখন ইউনিয়ন যুবলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, প্রশাসনের বোঝা উচিত একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে লোক যেতেই পারেন। সেটি নাশকতা নয়। আর যাদের সেখানে পেয়েছে তারাতো সবাই ওর পরিবারের লোক। এখন যা দেখছি জান-মাল নিরাপদ রাখা দায়। এভাবে হামলার পরে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দেওয়ার নিন্দা জানাই।
বার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, আমার পিতার মৃত্যুবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি নিতে আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে বৈঠক করছিলাম। তখন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন প্যাদার নেতৃত্বে অর্ধশত লোক এসে আমার বাড়িতে ঢুকে আমাদের ৭ জনকে মারধর করেন। এ ছাড়া বাড়িতে থাকা মোট ১২ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তিনি দাবি করেন, সোমবার সন্ধায় কোনো রাজনৈতিক বৈঠক ছিল না। পারিবারিক বৈঠকে এভাবে হামলা হতে পারে কল্পনাও করতে পারছি না।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন প্যাদা। তিনি জানিয়েছেন, আমরা ওই বাড়িতে কোনো হামলা চালাইনি। তারা ঘটনা আড়াল করতে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। মূলত পুলিশ আসার খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই।
গ্রেপ্তাররা হলেন বার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম (৪৭), সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল গাজী (৫০), ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মন্টু খান (৪৫), বার্থী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সম্পাদক কাইয়ুম খান (৩৮), ইউনিয়ন যুবদল কর্মী এনায়েত হোসেন (৩২), জাফর খান (৩৩), সাইফুল ইসলাম (৩০), রেজাউল মোল্লা (৩৪), সামিউল বেপারী (৩০), ইউনিয়ন ছাত্রদল কর্মী আকাশ খন্দকার (২৬), মুন্না আহম্মেদ (২৪) ও ইখতিয়ার তালুকদার (৩৬)।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরআই