১০ বছরের সংসারজীবনে সন্তান নেই। পাড়াপ্রতিবেশী এ নিয়ে কটু বাক্য বরথে ছাড়েনি। মুখ বাঁচাতে তাই একটি সন্তানের জন্য কত চিকিৎসকের কাছে গেছেন, কত মসজিদ-মাদরাসায় দান-সদকা করেছেন, তার ইয়ত্তা নেই।

অবশেষে সেই কটু বাক্য শোনার দিন শেষ হয়েছে। ফাইজুর ও লাকি দম্পতির কাকুতি-মিনতি শুনেছেন আল্লাহ। একটি নয়, তাদের কোলে তিনি পাঠিয়েছেন একসঙ্গে চারটি সন্তান। তাদের মধ্যে দুজন মেয়ে ও দুজন ছেলে।

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের বড় ছয়সূতী গ্রামে ফাইজুর ও লাকি দম্পতির বাড়ি। সন্তান পেয়ে আনন্দে পরিবার খুশি হলেও তাদের কাছে এখন তা বিষাদে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের ৬ এপ্রিল দুপুরে জেলার বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে লাকি আক্তার চার সন্তানের মা হন। চার সন্তানের মধ্যে দুজন মেয়ে ও দুজন ছেলে। ছেলেদের নাম হাসান ও হুসাইন। মেয়েদের নাম আসমা ও হাফসা।

সন্তান পেয়ে যেমন আনন্দে তেমনি বিষাদে ভর করেছেন তাদের। কারণ, ফাইজুর সামান্য দরজির কাজ করেন। যে টাকা আয় হয়, তা দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। নাড়িছেঁড়া ধন প্রিয় সন্তানদের প্রতিদিনের দুধ, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন দরজি বাবা। এতে চরম হতাশায় দিন কাটছে সন্তানের বাবা-মায়ের।

ফাইজুর রহমান ঢাকা পোস্টেকে বলেন, সিজারিয়ান অপারেশন করতে ওষুধসহ খরচ পড়েছে অনেক টাকা। তখন কিছু সহায়তা পেয়েছিলাম। কিন্তু চার সন্তান বড় হচ্ছে। তাদের খাবার দুধ, ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী কিনতে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ পড়ছে। দরজির কাজ করে সামান্য আয়ে কোনোভাবে চলি। তাতে বাচ্চাদের খরচ মেটাতে পারছি না। আবার কোনো মাসে আয় হয় না। তখন দোকান বাকিসহ প্রতিদিনই ঋণ বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, একটি সন্তানের জন্য আল্লাহ কাছে অনেক প্রার্থনা করেছি। অনেক হসপিটালে ঘুরেছি। অবশেষে আল্লাহ আমাদের চার সন্তান দিয়েছেন। এখন তাদের লালনপালন নিয়ে আছি দুশ্চিন্তায়। সমাজের হৃদয়বান কোনো ব্যক্তি যদি এগিয়ে আসে, তাহলে তাদের খাওয়াতে পারব। নইলে ঋণের ভারে আমি জর্জরিত হয়ে যাবে।

চার সন্তানের বাবা ফাইজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে (বিকাশ পার্সোনাল) ০১৯১৭-৬৩২৫৭৪ এই নম্বরে।

এনএ